কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে মহিলা দর্শকেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
ফুটবল তাঁদেরও পছন্দের খেলা। কিন্তু পুলিশে চাকরির পর খেলা সুযোগ হয়ে ওঠে না। আর সাফ ফুটবল প্রতিযোগিতায় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠে ভিড় সামলানোর দায়িত্ব পাওয়ার পর দোটানায় পড়েন রূপা রায়, দেবযানী রায়দের মতো মহিলা পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু কাজ করতে নেমে তাঁরা খানিক স্বস্তিতে।
খেলার মাঠে লোক সামলানো মানে তো খেলা ফেলে ভিড়ের দিকে তাকিয়ে থাকা। মাঝে মধ্যে মাথা ঘুরিয়ে দেখার সুযোগ মিললেও তাতে মন ভরবে না। তবে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের কর্মী রুপা, দেবযানীদের ভাগ্য সহায় হয়েছে। ভিড় সামলানোর চাপ বেশি নেই বলে গ্যালারিতে বসে দিব্যি খেলা দেখতে পারছেন সাফ মহিলা ফুটবলের। একই রকম ভাবে সুশীলা দাস, রিতা রায়দের মতো মহিলারাও পুলিশে কাজ করেন। তবে ভিড় সামলানোর দায়িত্ব না থাকলেও তাঁরা আসছেন খেলা দেখতে।
মহিলা পুলিশদের অনেকেই যে ফুটবলের ফ্যান তা জানান, রূপা, দেবযানীরাই। রূপার বাড়ি জলপাইগুড়ি। দেবযানী শিবমন্দিরে থাকেন। বললেন, ‘ফুটবল ভাল লাগে। একসময় ফুটবল খেলতামও।’’ স্টেডিয়ামে অবশ্য খেলা দেখতে আসছেন অনেক মহিলারাই। যেমন সুকান্তপল্লির বাসিন্দা শালিনী শিকদার বা শালুগাড়ার বাসিন্দা মমতা লামা, চেইং লামারা। শিলিগুড়ি কমার্স কলেজের ছাত্রী শালিনীর প্রিয় খেলা ফুটবল। ইস্টবেঙ্গলের ফ্যান। ফেভারিট ফুটবলার জিজ্ঞাসা করলে মুহূর্তেই বলে দেন ‘লিওনেল মেসি’র নামটা। বাবা সুপ্রিয়বাবুর সঙ্গে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসছেন। শালিনী বলেন, ‘‘আই লিগ তো দেখিই। লাল-হলুদের সমর্থক। ফুটবলে আলাদা একটা উন্মাদনা রয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবল রাত জেগে দেখি।’’ ঘরের মাঠে বুধবার ফাইনালে ভারত-বাংলাদেশের খেলা দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না তিনি।
নিয়মিত মাঠে এসে খেলা দেখছেন শ্যামলী সরকারও। দুই মেয়ে অনুমিতা এবং সুকন্যাও খেলা দেখতে আসছেন। শালুগাড়ার বাসিন্দা মমতাদেবী বলেন, ‘‘খেলাধূলায় উৎসাহ স্কুল থেকেই। এক সময় হকি খেলতাম। হকি ছাড়া ফুটবল আমার পছন্দের খেলা। শিলিগুড়িতে সাফ মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতা হচ্ছে যখন শুনেছি তখনই ঠিক করি মাঠে খেলা দেখতে যাব।’’ ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব লিগ্যাল স্টাডিজে পড়াশোনা করতে শিলিগুড়িতে থাকছেন রিনজিন, পূর্বা ওয়াংদিরা। তাঁরাও সাফ মহিলা ফুটবল নিয়ে উৎসাহী।
বুধবার ফাইনাল দেখতে দল বেঁধে আসার কথা বাতাসি চা বাগানের একদল উৎসাহী মহিলা ফুটবলারের। আসবেন সেবক রোডের রয়্যাল ফুটবল ক্লাবের মহিলা ফুটবলাররাও। শিবানী শর্মার, সঞ্জু তামাঙ্গদের মতো ওই ফুটবলাররা বলেন, ‘‘টিকিট কাটার সামর্থ্য না থাকায় ক্লাবের অনেক মহিলা ফুটবলার খেলা দেখতে গিয়ে ফিরে এসেছিল। সেমিফাইনাল থেকে মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের তরফে খেলা দেখার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় অনেকেই ম্যাচ দেখতে যাচ্ছে। কালিম্পং, মিরিক, শালুগাড়ার অনেক মহিলা ফুটবলার ক্লাবে খেলছে। ফাইনালেও আমরা খেলা দেখতে যাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy