নিখোঁজ: কুমকুম চৌধুরী।নিজস্ব চিত্র
সেবক করোনেশন সেতু থেকে তিস্তা নদীতে ঝাঁপ দিলেন এক মহিলা। রবিবার বিকেলে কার্শিয়াং থানার সেবক ফাঁড়ি এলাকার ঘটনা। একটি স্কুটি নিয়ে একাই সেতু এলাকায় কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন তিনি। পরে স্কুটি রেখে আচমকা নদীতে ঝাঁপ দেন। রবিবার বিকেলে ওই এলাকায় গাড়ি ভাল সংখ্যাতেই ছিল। লোকজনও ছিল। কালিম্পঙের দিকে যাওয়ার রাস্তার সেতুর কোণ থেকে তিনি নদীতে লাফ দেন। লোকজন দৌড়ে গেলেও তাঁকে ধরতে পারেননি। খবর পেয়ে সেবক ফাঁড়ির পুলিশ অফিসারেরা ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয় লোকজন, পুলিশ কর্মীরা খোঁজ করলেও রাত পর্যন্ত ওই মহিলার কোনও হদিশ মেলেনি।
আজ, সোমবার তিস্তায় প্রশিক্ষিত এনডিআরএফ কর্মীদের নামানো যায় কিনা তা পুলিশ দেখছে। তবে বর্ষার খরস্রোতা তিস্তায় ওই মহিলা বেঁচে আছেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অফিসারেরা। গজলডোবা লকগেট এলাকাতেও নজর রাখা হয়েছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদি বলেন, ‘‘মহিলার পরিচয় জানা গিয়েছে। খোঁজ চলছে। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পারিবারিক কোনও বিবাদের জেরেই ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ মহিলার নাম কুমকুম চৌধুরী। তাঁর বাড়ি শিলিগুড়ির হায়দারপাড়ায়। বছর চল্লিশের কুমকুমদেবীর স্বামী একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ওই স্কুটিটা তাঁর নামেই পরিবহণ দফতরে নথিভুক্ত রয়েছে। দম্পতির এক মেয়ে এবং যমজ দুই ছেলে রয়েছে। মেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছে। ছেলেরা ছোট। এ দিন দুপুরে বাড়িতে অশান্তির পর কুমকুমদেবী একাই স্কুটি নিয়ে বের হয়ে যান বলে পুলিশের সন্দেহ। তিনি বাজার বা পরিচিত কারও বাড়ি গিয়েছিলেন বলে পরিবারের লোকজন মনে করেছিল। কিন্তু বিকেল অবধি তাঁর কোনও খোঁজ ছিল না। মোবাইলও ধরছিলেন না।
কুমকুমদেবী ঝাঁপ দেওয়ার পরে স্কুটি থেকে গাড়ির নথিপত্র বার করা হয়। পরিবহণ দফতরের মাধ্যমে স্কুটি মালিকের ঠিকানা খোঁজা হয়। এরমধ্যে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে স্কুটির নম্বর এবং ঝাঁপ দেওয়ার খবর চাউর হয়। তাতেই মহিলার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে সেবকে যান। স্কুটিটা চিহ্নিত করা হয়। মহিলার পরিবারের এ দিন কেউ কোনও মন্তব্য করেননি।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, কুমকুমদেবী অসুস্থ হয়ে কিছুদিন আগেই নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। মেয়ের রেজাল্ট ভাল না হওয়ায় মানসিক অবসাদেও ছিলেন। এ কথা পরিচিতদের বলতেন। আবার বছর খানেক আগে এক আত্মীয়ের সঙ্গে পরিবারের বিবাদ নিয়ে থানা পুলিশও হয়েছিল। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
সেবকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, করোনেশন সেতু বা বাঘপুল এলাকার সব সময় লোকজন থাকে। ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করেন। নজর রাখেন দোকানদারেরাও। এ দিন মহিলা আচমকা লাফ দেওয়ায় কেউ কিছুই করতে পারেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy