আক্রান্ত: উদ্ধার করে আনা হয়েছে ওই মহিলাকে। নিজস্ব চিত্র
সোমবার সকালে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হন তিনি। তখন তাঁকে ‘নির্দোষ’ বলে ছেড়ে দেয় আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। অথচ, বিকেলে ফের গণপিটুনির শিকার হওয়ার পরে তাঁকেই ‘অপহরণকারী’ বলে গ্রেফতার করল রেল পুলিশ! মঙ্গলবার সেই অজয় বাঁসফোরকে নিজেদের হেফাজতেও নিয়েছে তারা।
জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছেলেধরা সন্দেহে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এই দেড় মাসের মধ্যে জেলায় সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার। সেখানে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এক ব্যক্তিকেই জেলার দুই প্রান্তে ছেলেধরা সন্দেহে দু’বার মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অজয় বাঁসফোর নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি বিহারের বৈশালী জেলায়। কর্মসূত্রে গুয়াহাটিতে সাফাইকর্মীর কাজ করেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নিজের তিন ছেলের মধ্যে সাত বছরের মেজো ছেলেকে নিয়ে বাবাধামে গিয়েছিলেন অজয়। সেখান থেকে রামপুরহাট হয়ে ট্রেনে চেপে গুয়াহাটি যাচ্ছিলেন। হঠাৎই আলিপুরদুয়ারে নেমে পড়েন তিনি। সোমবার সকালে ভোলারডাবরির শালবাগান এলাকায় তাঁকে ছেলেকে নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অজয় তাঁদের নিজের পরিচয়ও ঠিকমতো বলতে পারেননি। এর পরই ছেলেধরা সন্দেহে শুরু হয় গণপিটুনি। খবর পেয়ে জংশন ফাঁড়ির পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক চিকিৎসার এবং জেরার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে কিছু মেলেনি। তাঁর ইচ্ছে মতো তাঁকে শিলিগুড়িগামী একটি ট্রেন তুলে দেয় পুলিশ।
কিন্তু বিকেলে বীরপাড়ার দলগাঁও স্টেশনে সেই অজয়ই ফের ছেলেধরা সন্দেহে মার খান। অভিযোগ, স্থানীয় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ছেলেকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। খবর পেয়ে আরপিএফ তাঁকে উদ্ধার করে জিআরপি বা রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়। অপহরণের অভিযোগে তাঁকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়।
আলিপুরদুয়ারের এসপি নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘মামলাটা রেল পুলিশ দায়ের করেছে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’’ আলিপুরদুয়ার জংশন জিআরপি থানার কর্তারা বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে রেল পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ওই মাদ্রাসা শিক্ষক একটি এফআইআর দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতেই মামলা রুজু করে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিলিগুড়ি রেল পুলিশের এসপি অঞ্জলী সিংহ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই অজয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
এর মধ্যেই অবশ্য তাঁর সাত বছরের ছেলেটি নিখোঁজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy