Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

কার্ডের কাজে কেন প্রাথমিক শিক্ষক, ক্ষোভ

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ১৬ ডিসেম্বর থেকে জেলার বুথে বুথে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা সংশোধন এবং নাম তোলার কাজ। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের কাজ চলবে। ওই কাজে ‘ডিও’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলির অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। বুথে বুথে তাঁরা সেই কাজ করছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:০৪
Share: Save:

শিক্ষার অধিকার আইনকে উপেক্ষা করে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভোটার তালিকার কাজে যুক্ত করার অভিযোগে সরব হল দক্ষিণ দিনাজপুরের বাম শিক্ষক সংগঠন ‘এবিপিটিএ’। পুলিশকে দিয়ে ফোন করিয়ে গঙ্গারামপুরের কিছু শিক্ষককে ওই কাজের নিয়োগপত্র তুলতে বাধ্য করার অভিযোগও তুলেছে সংগঠনটি।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ১৬ ডিসেম্বর থেকে জেলার বুথে বুথে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা সংশোধন এবং নাম তোলার কাজ। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের কাজ চলবে। ওই কাজে ‘ডিও’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলির অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। বুথে বুথে তাঁরা সেই কাজ করছেন।

শিক্ষার অধিকার আইনকে উপেক্ষা করে স্কুলে পড়ানোর সময়ে শিক্ষকদের দিয়ে ওই কাজ করানো হচ্ছে বলে সরব বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন। এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আইনে স্পষ্ট লেখা রয়েছে ভোট ও জরুরি অবস্থার মতো কোনও পরিস্থিতি ছাড়া স্কুলের সময়ে অন্য কোনও কাজে শিক্ষকদের যুক্ত করা যাবে না। কিন্তু তাঁদের ডিও হিসেবে বুথে বুথে ওই কাজে নামানো হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। তাতে স্কুলে পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে প্রভাব পড়ছে।

সংগঠনের অভিযোগ, জেলার ১ হাজার ১৭৯টি প্রাথমিক স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ওই কাজে তুলে নেওয়া হয়েছে। তার জেরে অনেক স্কুলে এক জন করে শিক্ষক রয়ে গিয়েছেন। এতে নতুন শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়া ভর্তি, নতুন বই বিতরণ, পঠনপাঠন থেকে মিড-ডে মিল চালাতে সে সব স্কুলের এক জন শিক্ষককে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে বলে সংগঠনের অভিযোগ।

ওই শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বের অভিযোগ, এই কাজে নিযুক্ত অনেক শিক্ষিকা প্রত্যন্ত এলাকার বুথে বিকেল ৫টা পর্যন্ত থাকতে হবে বলে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। গঙ্গারামপুরে কিছু শিক্ষককে পুলিশ দিয়ে ফোন করিয়ে চাপ দিয়ে ওই কাজে পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

গঙ্গারামপুরের এবিপিটিএ নেতা পার্থ সরকার জানান, মাতৃত্বকালীন ও অন্য কাজে ছুটিতে থাকা অন্তত ৩০ জন শিক্ষক ‘ডিও’ হিসেবে ভোটার তালিকার কাজ করতে অস্বীকার করে নিয়োগপত্র তোলেননি। স্থানীয় থানার পুলিশকে দিয়ে ওই শিক্ষকদের ফোন করে নিয়োগপত্র তুলতে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পার্থ। এর প্রতিবাদে এ দিন জেলাশাসক ও জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়।

জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যেই প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কাজ করানো হচ্ছে। তার জেরে শিক্ষাক্ষেত্রে ক্ষতি ও পঠনপাঠনের সমস্যা না হয় তা দেখা হবে। এখানে পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই। ফোন করে শিক্ষকদের চাপ দেওয়ার অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

ABPTA Adhar Card
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE