Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪
homeless

মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে গর্ভবতীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন

জলপাইগুড়ির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের কাছে বৃহস্পতিবার খবর আসে, ময়নাগুড়ির জল্পেশ মোড় এলাকায় এক গর্ভবতী মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা পড়ে আছেন। ওই সংস্থার কর্মীরা জানান, দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

ছবি: শাটারর্স্টক

ছবি: শাটারর্স্টক

অর্জুন ভট্টাচার্য
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩৫
Share: Save:

আবার এক মানসিক ভারসাম্যহীন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার খোঁজ মিলল জলপাইগুড়িতে। গত এক বছরে সরকারি হিসেব মতো এই নিয়ে সংখ্যাটি দাঁড়াল ছয়ে। জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রেই জানানো হয়েছে, এই ক’জনকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে এক বছর ধরে। এই ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি থেকে প্রশাসনের একটি অংশের আশঙ্কা, নতুন করে শিশুপাচারের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, এই মায়েদের সন্তান সহজেই দুষ্কৃতীচক্রের হাতে চলে যেতে পারে। তাদের নিরাপত্তা কী ভাবে নেওয়া সম্ভব, সেটাই এখন মাথাব্যথার কারণ।

জলপাইগুড়ির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের কাছে বৃহস্পতিবার খবর আসে, ময়নাগুড়ির জল্পেশ মোড় এলাকায় এক গর্ভবতী মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা পড়ে আছেন। ওই সংস্থার কর্মীরা জানান, দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখনই অভিযোগ ওঠে, মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরেদের জন্য নির্দিষ্ট কোনও আশ্রয় স্থানও জলপাইগুড়ি জেলায় নেই। আরও অভিযোগ, এই ধরনের মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাদের শিশু সহজেই পাচারকারীদের হাতে পড়ে।

মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সূত্রের খবর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অনেক সময়ে এই ধরনের নাম গোত্রহীনদের ভর্তি নিতেও অস্বীকার করে। এক স্বাস্থ্য কর্তা জানান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা অনেক সময়েই এই ধরনের মানসিক ভারসাম্যহীন গর্ভবতী মহিলাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে দায় এড়াতে চান। সন্তান প্রসবের পর মানসিক অসুস্থদের কাছে সদ্যোজাতদের রাখাটাও নিরাপদ নয়।
জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে আমরা কোনও রোগীদেরই ফিরিয়ে দিতে পারি না। স্বভাবতই আমাদের দায়িত্ব নিতে হয়। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেই আমরা এদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা দিয়ে থাকি।’’

জলপাইগুড়ির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে প্রশান্ত সরকার বলেন, ‘‘ভবঘুরেদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সরকারের। বিশেষ করে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।’’ জলপাইগুড়ি জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির চেয়ারপার্সন বেবী উপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভবঘুরে পাগলীরাও গর্ভবতী হচ্ছে। সামাজিক লজ্জা আমাদের।’’

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বস্তিশোভন চৌধুরী বলেন, ‘‘মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মহিলাদের যৌন নির্যাতন রুখতে পুলিশ-প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে।’’ জলপাইগুড়ির এসপি অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘এখনও এমন কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

women welfare homeless people
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE