বর্মণদের সেই ‘বিতর্কিত’ জমি। —নিজস্ব চিত্র।
জমি সংক্রান্ত কারণেই কি ময়নাগুড়িতে মারা হয়েছে মা ও ছেলেকে? উঠছে প্রশ্ন। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এর পিছনে জমি মাফিয়াদের কোনও চক্র জড়িত কি না তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ওই জমিতে থাকা জলাশয়ে এলাকার আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল কোন উদ্দেশ্যে, উঠছে সে প্রসঙ্গও। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে বলেন, ‘‘পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত করছে।’’
মঙ্গলবার সকালে ময়নাগুড়ির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পেশায় হোমগার্ড পরিমল বর্মণের (৪৫) রক্তাক্ত দেহ পুলিশ ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি নয়ানজুলির ধারে ধান খেত থেকে উদ্ধার করে। ভারী কিছুর আঘাতে পরিমলের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। সে মৃত্যুসংবাদ দিতে গেলে, পরিমলের মা সবিতা বর্মণের (৬৫) দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিছানার কাছে ঘরের মেঝেতে হাত-পা ছড়িয়ে বসে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হয় সবিতার দেহ। বাড়ির সদর দরজা বাইরে থেকে আটকানো থাকলেও, বাড়ির সব ঘরের দরজা খোলা ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পরিমলের মৃত্যুকে খুনের ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সবিতা বর্মণের মৃত্যু হয়েছে বলে ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্মণবাড়ির ঘনিষ্ঠ এক প্রতিবেশী ও সম্পর্কে আত্মীয় নৃপেন্দ্রনাথ বর্মণ দাবি করেন, ‘‘প্রায় ৫০ বছর ধরে বর্মণ পরিবারের লোকেরা শ্যামলাল কল্যাণীদের প্রায় ছ’বিঘা জমিতে বর্গাদার হিসেবে বসবাস করছেন। নানা প্রলোভনেও বসতবাড়ি ও এই জমি ছেড়ে তাঁরা যেতে রাজি হননি কখনও। মোট জমির ৭২ ডেসিমেল জমি তাঁদের দানপত্র করে দেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল। কেন এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না!’’ কল্যাণী পরিবারের ম্যানেজার মহাবীরপ্রসাদ ঘাটানি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই বর্গাদারের সঙ্গে ওই জমি নিয়ে মামলা চলছিল। গত মার্চ মাসে শ্যামলাল কল্যাণীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর আগে, বর্গাদারের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়েছিল কি না, তা জানা নেই। তবে ময়নাগুড়িতে এমন নৃশংস ঘটনা কেন ঘটল তা বুঝতে পারছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্মণ পরিবারের অধীনে থাকা এই জমির একাংশে বাঁশঝোপ-সহ একটি জলাশয় রয়েছে। ওই জলাশয়ে পুর এলাকার আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে।জলাশয় ও জলাভূমি ভরাট করার উদ্দেশ্যে কি এমন কাজ করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি তুহিনকান্তি চৌধুরী যদিও অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে পতিত জমি পড়ে থাকায় আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল।’’
পুরসভার উপপুরপ্রধান মনোজ রায় বলেছেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেন ওই জলাভূমিতে আবর্জনা ফেলছেন, অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy