বুদ্ধদেবের ফোন পেয়ে আবার ভোট ময়দানে নেমেছেন অশোক। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের দাপটে রাজ্যে একের পর এক পুরসভা যখন বিরোধীদের হাতছাড়া হয়েছে, শিলিগুড়িতে পাল্টা দাপট আর কৌশলী মহাজোটে বামেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। সেই অশোক ভট্টাচার্যই শনিবার কেঁদে ফেললেন ভোট দিতে গিয়ে। বছরের পর বছর তিনি ভোট দিতে এসেছেন সস্ত্রীক। গত বিধানসভা ভোটেও সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রত্না ভট্টাচার্য। কিন্তু এ বার নেই। গত অক্টোবরে প্রয়াত হয়েছেন রত্না। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে পুরনো কথা মনে পড়ে গেল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিদায়ী মেয়রের। চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি অশোক। তিনি এ বারও শিলিগুড়ির পুরভোটে সিপিএমের প্রার্থী।
শিলিগুড়ির নেতাজি বয়েজ হাই স্কুলের বুথে দুপুর ১২টা নাগাদ ভোট দিতে যান অশোক। কথা বলছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। বললেন, ‘‘এই প্রথম একা একা ভোট দিলাম। খুব খারাপ লাগছে। অন্য বার স্ত্রী থাকত। ও জীবিত থাকলে খুশি হত।’’ বলতে বলতেই আবেগে গলা বুজে আসে তাঁর। চোখের জল আটকানের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পারেননি। নিজেকে একটু সামলে জানালেন, স্ত্রী-র ছবিতে মালা দিয়ে ভোটের দিন সকালে বের হয়েছেন। বিয়ের পর থেকে ছায়াসঙ্গীর মত পাশে পাশে থাকতেন স্ত্রী। এই প্রথমবার তিনি একা। সেই স্মৃতিই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবীণ প্রার্থীকে।
গত বিধানসভা ভোটে ‘শিষ্য’ শঙ্করের কাছে হারের পর, ভোট রাজনীতি থেকে ‘সন্ন্যাস’ ঘোষণা করেছিলেন অশোক। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এক ফোনে পুরভোটে আবারও তিনি ভোটের ময়দানে। ৭২ বছর বয়সে প্রচার করতে চষে বেড়িয়েছেন শিলিগুড়ি। ভোটের হাওয়া কেমন বুঝছেন? অশোক বললেন, ‘‘যে ভাবে ভোটপ্রক্রিয়া চলছে তাতে বামেদের ফল খুব ভাল হবে বলে আশা রাখছি। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও, তা নির্বাচন কমিশন বা পুলিশকে জানালে সমস্যার সমাধান হচ্ছে।’’
তার পর তিনি যোগ করেন, ‘‘ভোট এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে হচ্ছে। এখানে যেন কলকাতার মতো না হয়। পুলিশ-প্রশাসন আরও একটু জোরদার হলে ভাল হত। শাসকদলের আধিপত্য, ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে মানুষ রায় দেবেন। বামফ্রন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। এই ভাবে ভোট হলে আমরাই জিতব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy