তুফানগঞ্জে আহত তৃণমূল কর্মী কানু দাশ। —নিজস্ব চিত্র।
হিংসা থামছেই না কোচবিহারে। পঞ্চায়েত ভোটের আগের রাতে ফের গুলি চলল দিনহাটার ওকরাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। গুলিতে আহত হয়েছেন বাম-কংগ্রেসের জোটপ্রার্থীর এক সমর্থক। তুফানগঞ্জে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। অন্য এক তৃণমূল কর্মী গুরুতর আহত হয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি। দিনহাটার ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। তুফানগঞ্জের ঘটনার অভিযোগের তির বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। দু’টি ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত তাদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে দিনহাটার ওকরাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেশ্বর এলাকায় ভোটের প্রচার শেষ করে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ফিরছিলেন কংগ্রেস-বাম সমর্থিত জোটপ্রার্থীর সমর্থক রফিকুল ইসলাম। স্থানীয়দের অভিযোগ ওই সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ব্যাপক বোমাবাজি এবং গুলি চালাতে শুরু করে। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন রফিকুল। তাঁকে দিনহাটা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। গুলি চালানোর ঘটনায় তৃণমূলের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, “তৃণমূলের নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা পুলিশ নিশ্চয়ই তদন্ত করে দেখবে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ যুক্ত নয়।”
অন্য দিকে, তৃণমূলের অভিযোগ, কোচবিহারের তুফানগঞ্জ মহকুমার রামপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাট বলগা এলাকায় ৬৮ নম্বর বুথে দু’জন তৃণমূল কর্মী বুথ ক্যাম্পে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় পিছন থেকে তাঁদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। তৃণমূলের দাবি, এই হামলায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গণেশ সরকার নামে স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর। অন্য এক দলীয় কর্মী কানু দাস আহত হয়েছেন। তাঁকে পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারের কামাখ্যাগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মৃত তৃণমূল কর্মীর দেহও সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
তুফানগঞ্জে তৃণমূল কর্মীকে খুনের ঘটনায় আঙুল উঠছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। দলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “বিজেপি দুষ্কৃতীবাহিনী নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করল তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ চেয়ারম্যান গণেশ সরকারকে। এই ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাই।” জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকও এই হামলা নিয়ে পোস্ট করেছেন সমাজমাধ্যেমে। যদিও বিজেপির তরফ থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুলিশও কোনও মন্তব্য করেনি এ বিষয়ে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতেও দিনহাটায় তিন বিজেপি কর্মীকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও এক বিজেপি কর্মী। যদিও শাসক দলের তরফে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে একাধিক বার অশান্তি ছড়িয়েছে দিনহাটায়। গত ১৭ জুন গভীর রাতে কোচবিহারের দিনহাটায় শম্ভু দাস (২৭) নামে এক বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এর পর গত ২৭ জুন দিনহাটার গীতালদহ-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জারিধরলায় এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে বাবু হক (৩৪) নামে এক তৃণমূল সমর্থক প্রাণ হারান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy