আবেদন: শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে এক শ্রমিকের মাস্ক নেই দেখে তাঁকে তা ব্যবহার করতে বলেন পরিদর্শক দলের সদস্যরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
লকডাউন কি ঠিক মতো মানা হচ্ছে? শিলিগুড়ির কয়েকটি বাজারের ঘোরার সময়ে এই প্রশ্ন করা হয় কেন্দ্রীয় দলকে। জবাবে দলের নেতৃত্বে থাকা বিনীত জোশী বলেন, ‘‘লকডাউন ঠিক মতো মানা হচ্ছে না। বাইরে লোকজন ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’
শুক্রবার উত্তরবঙ্গে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলটি রাস্তায় নামে দুপুর পার করে। এ দিন বিকেলের পর শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার, খালপাড়া নায়াবাজার পরিদর্শন করে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি। সন্ধ্যার মুখে লকডাউন পরিস্থিতিতে লোকজন কম ছিল। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন ওই সদস্যরা। যেখানে করোনার নির্ণায়ক পরীক্ষা হচ্ছে, সেই ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিও ঘুরে দেখেন।
নয়াবাজার এলাকা ঘুরে দেখার সময়ে অবশ্য তাঁরা কেউ গাড়ি থেকে নামেননি। তবে নিয়ন্ত্রিত বাজারে একাধিক আনাজের আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ী, কর্মী, শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, বাজারে কেমন লোক আসছে? ভিড় আগের চেয়ে কতটা কম? দোকানে কী ভাবে জিনিস বিক্রি করছেন? একটি দোকানের কর্মী সঞ্জয় রায়, ভবেশ দাসরা জানান, দোকানের সামনে রেলিং দেওয়া থাকে। দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে। শ্রমিকেরা রয়েছেন। তাঁরা কেউ ক্রেতাদের আনাজ ওজন করে স্লিপ করে টাকা নিয়ে আসেন। দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার রয়েছে কি না, জানতে চায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে তা দেখতেও চান। স্যানিটাইজ়ার বার করা হলে কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা-ও জানতে চান। আলুর আর একটি আড়তে গিয়ে একই ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা।
সেখানেই তাঁকে রাজ্যের লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিনীত জোশী বলেন, ‘‘লকডাউন কম মানা হচ্ছে। বাইরে লোকজন ঘুরছেন।’’ এ ব্যাপারে জেলাশাসক এস পুন্নম বলম বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের বক্তব্য নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
লকডাউন পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বাজারে, রাস্তায় বা রেশনে ভিড় নজরে পড়ছে নিয়মিত। মুখ্যমন্ত্রী ধমক দিলে শিলিগুড়িতেও দিন কয়েক আগে তৎপর হয় পুলিশ। সেই খবর জানেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। আগের দিনও শিলিগুড়িতে বালাসন সেতু লাগোয়া পালপাড়ায় রাস্তার ধারে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড় নজরে এসেছিল। এ দিনও বিবেকানন্দ রোড ধরে নয়াবাজারে যাওয়ার সময় চায়ের দোকানে আড্ডা নজরে পড়ে।
এর আগে সকাল থেকে রানিডাঙায় এসএসবি’র গেস্ট হাইজে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে প্রতিনিধিদলটি। তবে কোনও সরকারি আধিকারিককে এ দিন সেখানে যেতে দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় মুখ্যসচিব জানান, যা সহযোগিতা করার, তাঁরা করেছেন। এর পর আর কিছু তাঁদের তরফে দেওয়ার নেই। এই নিয়ে শুক্রবার এসএসবি গেস্ট হাউজ এলাকাতেও জল্পনা শুরু হয়। তবে বিকেল চারটে নাগাদ তিনটি গাড়ি করে পাঁচ সদস্য পরিদর্শনে বার হন। এসএসবি’র গাড়িতে এবং তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দু’ঘণ্টা ঘোরেন। মেডিক্যাল মোড় থেকে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন প্রশাসনের তরফে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিক। এ দিন কলকাতায় থাকা প্রতিনিধিদলের সদস্য অপূর্ব চন্দ মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন অসহযোগিতার কথা জানিয়ে। বিনীত বলেন, ‘‘অসহযোগিতা ছিল। এ দিন আমাদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের অফিসার রয়েছেন। আশা করি, এই সহযোগিতা মিলবে।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল পরিদর্শনের পর বিনীত বলেন, ‘‘পরিদর্শন শেষে আমরা আলোচনার পর কেন্দ্র এবং রাজ্যকে রিপোর্ট দেব।’’ এ দিন উত্তরবঙ্গ মেড়িক্যালের অধ্যক্ষ, মাইক্রোবায়োলজির প্রধান, অন্য ডাক্তারদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা। ল্যাবরেটরিও দেখেন। কিটের অভাব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিনীত জানান, এখানে যে সংখ্যা রোগী আসছে, সেই তুলনায় প্রয়োজনীয় কিট রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy