বিশেষ ট্রেনে ফিরে এলেন লকডাউনের জেরে চেন্নাইয়ে আটকে পড়া সিকিমের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার এনজিপি স্টেশনে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন নিয়ে বহর ছিল প্রচারে। কিন্তু অভিযোগ, টিকিটের বেশি দামই শুধু নয়, প্রচণ্ড দুর্ভোগ নিয়েই বেঙ্গালুরু থেকে এনজেপি পৌঁছলেন ওই ট্রেনের যাত্রীরা। অনেকেরই নালিশ, ট্রেনে খাবার ও জল ছিল না। তাতে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন। মানা হয়নি সামাজিক দূরত্বও। বাইরে থেকে ট্রেনটি ‘স্যানিটাইজ়’ করা হলেও, শৌচাগার অল্প সময়েই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বেসিন থেকে উপচে পড়ে ময়লা জল।
রেলের দাবি, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে বিশেষ ট্রেনের যাত্রীদের শুকনো খাবার এবং জল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের একাংশের নালিশ, কোনও কিছুই সময়ে মেলেনি। দু’দিনের সফরকালে এক এক জন মাত্র তিন লিটার করে জল পেয়েছেন।
বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার নার্সিং ছাত্রী নবনীতা মাইতি ও তাঁর চার বান্ধবী ছিলেন ওই ট্রেনে। তিনি বলেন, ‘‘সিটি পুলিশ টোকেন দিয়ে নিয়েছিল ৯২০ টাকা। পরে দেখলাম টিকিটের দাম ৭৮০ টাকা। পুরো যাত্রাপথে সন্ধ্যার খাবার ভোরে পেয়েছি। কখনও শুকনো খাবার পেলেও জল পাইনি।’’ উত্তরবঙ্গের একাধিক যাত্রীরও একই অভিযোগ ছিল।
দক্ষিণবঙ্গের একাধিক যাত্রী দক্ষিণবঙ্গের কোনও স্টেশনে নামতে না পেরে সোজা উত্তরবঙ্গে নামতে বাধ্য হন। আসানসোল এবং দুর্গাপুরের মতো স্টেশনে ট্রেন থামার পরে বেশ কিছু যাত্রী নেমে পড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু রেলপুলিশ এবং রেল সুরক্ষা বাহিনী তাঁদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সেখানে যাত্রীদের সঙ্গে বাহিনীর জওয়ানদের হাতাহাতিও হয়। কোথায় ট্রেনটি থামবে, কোন জেলার যাত্রীরা কোথায় নামতে পারবেন, তার সমন্বয় রেল ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে ছিল না বলে অভিযোগ।
পূর্ব রেলের মুখ্য জন-সংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বিষয়টি প্রসঙ্গে বলেন, “এনজেপিগামী ট্রেনটি থেকে কয়েকজন যাত্রী আসানসোল স্টেশনে নেমে পড়েন। নেমে পড়ার পরে, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা যাত্রীদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে।” যাত্রীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেননি রেল-কর্তারা।
রেল দাবি করেছিল, সামাজিক দূরত্ব মেনে এক একটি কামরায় ৫৪ জন করে যাত্রী নেওয়া হবে। কিন্তু যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, ট্রেনের এক একটি কামরায় ৬২ জন করে যাত্রী থাকায় সামাজিক দূরত্বের বিধি কার্যত মানা যায়নি।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘যাত্রীদের এত অসুবিধার মধ্যে পড়ার কথা নয়, আমরাও তাঁদের প্রতিক্রিয়া নিচ্ছি। যে যে স্টেশনে এরকম অসুবিধা হয়েছে, সেইসব জায়গায় আমরা বার্তা পাঠাব।’’
অভিযোগ, এনজেপিতে ওই বিশেষ ট্রেনে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষায় প্রচুর সময় লাগছে। চর্মরোগ ছড়ানোর ভয়ে রেলের স্বয়ংক্রিয় জীবাণুমুক্ত স্প্রে ছড়ানোর টানেল বন্ধ। তার জেরে এক বার রেল এবং এক বার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এত দূরের সফরে ক্লান্ত যাত্রীদের আরও অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy