Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

বিজেপিকে বিঁধে আবারও গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে সুর চড়ালেন অনীত, পাল্টা তোপ মহাজোটেরও

পঞ্চায়েত ভোটে ‘গোর্খাল্যান্ড’ প্রসঙ্গ উঠে আসায় জল্পনা তৈরি হয়েছে পাহাড়ের রাজনীতিতে। তার কারণ, অনীতের দলের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া। যাদের গোর্খাল্যান্ডের দাবির বিরোধিতা করার ইতিহাস রয়েছে।

অনীত থাপা।

অনীত থাপা। নিজস্ব চিত্র।

পার্থপ্রতিম দাস
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ২৩:১৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে আবারও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সুর চড়ালেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রধান অনীত থাপা। পাহাড়ের ‘মহাজোট’ নিয়ে বলতে গিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেন জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-এর চিফ এগ্‌জিকিউটিভ। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে, বিজেপি গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিলেই পঞ্চায়েত ভোটে সমস্ত প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেবে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা।

সুবাস ঘিসিং বা বিমল গুরুংয়ের আমলে রাজ্যের দাবিতে পাহাড় বারবার অশান্ত, অগ্নিগর্ভ হয়েছে। গোর্খাল্যান্ডের দাবিদাওয়াই পাহাড়ের রাজনীতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক কালে। গত বিধানসভা বা দার্জিলিং পুরভোটে অনীতের দল আলাদা রাজ্য নিয়ে বিশেষ সরব না হলেও জিটিএ-র ভোটে সেই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়। ভোটে জিতে জিটিএ-তে ক্ষমতায় এলে প্রথম সভাতেই আলাদা রাজ্য নির্মাণের ‘রোড ম্যাপ’ তৈরির সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছিলেন অনীত। এ বার পঞ্চায়েত ভোটেও সেই প্রসঙ্গ উঠে আসায় জল্পনা তৈরি হয়েছে পাহাড়ের রাজনীতিতে। তার কারণ, অনীতের দলের সঙ্গে বাংলার শাসকদল তৃণমূলের বোঝাপড়া। যাদের গোর্খাল্যান্ডের দাবির বিরোধিতা করার ইতিহাস রয়েছে।

অনীতে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে এই পরিস্থিতির জন্য বিজেপিকেই দুষেছেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের (পাহাড়) সভাপতি শান্তা ছেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের দাবি করে বিজেপি পাহাড়ে একের পর লোকসভা নির্বাচনে জিতেছে। স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের কথাও বলেছে বিজেপি। কিন্তু কোথায় সে সব! কিছুই পূরণ করেনি ওরা। উল্টে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জিতছে। কাজেই এক রকম ভাবে আঞ্চলিক দলগুলোর উপর বিজেপি প্রভাব খাটাচ্ছে। এই বাইরে এখন আর কোনও মন্তব্য নয়।’’

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রীতিমতো ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েই পাহাড়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল মহাজোট। রাজ্যের শাসক তৃণমূল এবং পাহাড়ে জিটিএ-তে ক্ষমতাসীন অনীতের দলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দিয়ে এক ছাতার তলায় এসেছিল বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, অজয় এডওয়ার্ডের হামরো এবং বিজেপি। সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দল। তার পরেও গোটা মনোনয়ন পর্ব জুড়ে প্রায় সর্বত্রই ‘সমন্বয়ের অভাবের’ দেখা গিয়েছে। মহাজোট প্রার্থী দিতে না পারায় ভোটের আগেই পাহাড়ে দ্বিস্তর পঞ্চায়েতে পঞ্চাশের বেশি আসনে ইতিমধ্যেই জিতে গিয়েছে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রার্থীরা। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী সেই সব প্রার্থীদের বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাবে সংবর্ধনা দেন অনীত। সেখানে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপি পাহাড়ে আঞ্চলিক দলগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে। পাহাড়ের স্বার্থে বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড-সহ সব ক’টি আঞ্চলিক দলগুলোর এক হওয়ার প্রয়োজন আছে। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা নয়, গোর্খা ও গোর্খাল্যান্ড বিরোধী যদি কেউ থাকে, তা হল বিজেপি।’’ এর পরেই চ্যালেঞ্জ অনীত বলেন, ‘‘যদি বিজেপি ঘোষণা করে যে, তারা গোর্খাল্যান্ড দেবে। তা হলে আমরা সব প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেব।’’

এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অনীত এবং তৃণমূলকে একযোগে বিঁধেছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘পাহাড় নষ্ট করার পিছনে তৃণমূলের বড় হাত রয়েছে। তবে তৃণমূলের থেকেও পাহাড় নষ্ট করার পিছনে বড় অবদান রয়েছে অনীত থাপার। গোটা পাহাড়কে কেন্দ্র করে দুর্নীতি চলছে। বিজেপির উপর পাহাড়বাসীর একটা আস্থা রয়েছে। গোর্খাল্যান্ডের সমাধান আর যদি কেউ করতে পারে, তা হলে সেটা বিজেপিই। কেন্দ্র সরকার এই বিষয়ে কাজ করছে৷’’ মহাজোটের শরিক হামরো পার্টি প্রধান অজয়ও বলেন, ‘‘অনীত যদি তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ তাহলে আমর দল, দলের নেতা-কর্মী, এমনকি আমি পর্যন্ত অনীতের দলে যোগ দেব। আর বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা শুধুমাত্র পঞ্চায়েত নির্বাচনে। এর পর লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। ওই নির্বাচনে আমরা মহাজোটে নেই৷’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2023 Anit Thapa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy