বাসের নীচে পড়ে রয়েছে এক পড়ুয়ার সাইকেল। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে ঢোকার মুখে মিনিবাসের ধাক্কায় গুরুতর জখম হল দুই পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার সকালে ওই পথ দুর্ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়াল মালদহের ইংরেজবাজার থানার দামোদরপুরে। অভিযোগ, মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়কে ট্র্যাফিক পুলিশের নজরদারির দাবিতে রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি ওই মিনিবাসে ভাঙচুর করেন পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকর্মীদেরও ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। ইংরেজবাজার থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামলান। একই সঙ্গে স্কুলের সময়ে এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েনের আশ্বাসও দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পথ দুর্ঘটনায় আহত হয় নিবারণ মল্লিক ও সুদীপ্ত বাড়ই। তাদের বাড়ি ইংরেজবাজার থানার দৌলতপুর গ্রামে। তারা সান্তা দেব্যা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। দু’জনের চিকিৎসা চলছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘মিনিবাস আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক। তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ একই সাইকেলে নিবারণ ও সুদীপ্ত স্কুলে আসছিল। অভিযোগ, স্কুলের সামনে রাস্তা পেরনোর সময় বেপরোয়া গতিতে এসে মালদহগামী একটি মিনিবাস তাদের ধাক্কা মারে। সাইকেল থেকে রাস্তার ফুটপাতে ছিটকে পড়ে দু’জনে। বাসের চাকায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় সাইকেল। স্কুলের শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা আহত পড়ুয়াদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। নিবারণের মাথায় এবং সুদীপ্তের শরীরে আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, ওই পড়ুয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই পথ দুর্ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায়। ওই মিনিবাস আটক করে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়কে প্রায় দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয়। অভিযোগ, একই সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের একাংশ ওই গাড়িতে ভাঙচুর চালান। অভিযোগ, ওই ঘটনার ছবি মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তুলতে গিয়ে প্রহৃত হন একাধিক যুবক। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হয় পুলিশকেও।
অভিযোগ, বাঁশ নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন উত্তেজিত জনতার একাংশ। ধাক্কাধাক্কি করা হয় পুলিশকে। পরে বাড়তি পুলিশ বাহিনী গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দুপর সাড়ে ১২টা নাগাদ রাজ্য সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান স্কুলেও। পড়ুয়াদের একাংশ জানায়, বছরখানেক আগেও পথ দুর্ঘটনায় স্কুলের এক ছাত্র আহত হয়েছিল। সেই সময় ট্র্যাফিকের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। তার পরে স্কুলের সময়ে সেখানে এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকতেন। অভিযোগ, মাসদু’য়েক ধরে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার সেখানে মোতায়েন করা হয় না। সে জন্যই বেপরোয়া গতিতে এলাকায় যান চলাচল করে।
অভিভাবকদের দাবি, রাজ্য সড়কের পাশে একটি উচ্চ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দুই স্কুলে প্রায় দেড় হাজার পড়ুয়া রয়েছে। স্কুলছাত্রী ফুলমতি বিশ্বাস, মৌমিতা কির্তনীয়া বলে, ‘‘রাজ্য সড়ক খুবই সংকীর্ণ। গাড়িও চলে দ্রুত গতিতে। ফলে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতেভয় হয়।’’
ওই এলাকায় নিয়মিত সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন এবং যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy