অভীক দাস এবং সমৃদ্ধি দে। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল আলিপুরদুয়ারের দুই পড়ুয়া অভীক দাস ও সমৃদ্ধি দে। ম্যাকউইলিয়াম উচ্চতর বিদ্যালয়ের ছাত্র অভীক ৬৯০ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ হয়েছে। নিউটাউন গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী সমৃদ্ধি ৬৮৪নম্বর পেয়ে দশম।
বরাবরই পড়াশোনার প্রতি ভালবাসা ছিল আলিপুরদুয়ার শহরের পূর্ব আনন্দনগরের বাসিন্দা অভীকের। তাই ছোট থেকেই পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি ছেলের জন্য নানা ধরনের বই এনে দিতেন স্কুল শিক্ষক বাবা প্রবীর কুমার দাস ও মা শ্যামলী দাস। বই পাগল অভীকও নিমেষে শেষ করে ফেলত সেই বই। নিজের পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই উচু ক্লাসের পাঠ্যও পড়তো সে। যে কারণে সপ্তম শ্রেণিতেই মাধ্যমিক পরীক্ষার অনেক প্রশ্ন সমাধান করতে শুরু করে অভীক।
পরীক্ষায় বরাবরই প্রথম। করোনার সময় অনলাইনে ক্লাস করেছে। ছিলেন পাঁচ জন গৃহশিক্ষকও। অভীকের কথায়, “অফলাইনে পরীক্ষা দিতে পারব কী না, তা নিয়ে একটা চিন্তা ছিল। কিন্তু প্রস্তুতিতে কোনও ঘাটতি রাখিনি। লক্ষ্য ছিল রাজ্যের মেধা তালিকায় দশের মধ্যে থাকার। শেষ পর্যন্ত যে প্রথম পাঁচের মধ্যে চলে আসব, তা ভাবতে পারিনি।”
পশ্চিম ইটখোলার বাসিন্দা সমৃদ্ধির লড়াইটা কিন্তু একটু কঠিনই ছিল। করোনাকালে কাজ বন্ধ হয়ে যায় বাবা টুবিন দের। এর পর টুকটাক কাজ করে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি। আর্থিক সমস্যার জন্যই সমৃদ্ধিকে দু’জনের বেশি গৃহশিক্ষক দিতে পারেননি। তবে স্কুলের শিক্ষিকা কিংবা দুই তুতো দিদির পাশে থেকেছে তার। উৎসাহ জুগিয়েছেন মা স্মিতা দেও।
সমৃদ্ধির জীবনে টার্নিং পয়েন্ট আসে পঞ্চম শ্রেণিতে। নিউটাউন গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি হলেও ‘এ’ সেকশনের বদলে ‘বি’ সেকশনে সুযোগ হয় তার। এতেই তৈরি হয় জেদ। ভাল পরীক্ষা দিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এ সেকশনে জায়গা করে নেয় সমৃদ্ধি। তার পর প্রতি ক্লাসে তার ক্রমিক সংখ্যা উপরে উঠতে থাকে। সমৃদ্ধির কথায়, “যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছিলাম, তাতে যে ভাল রেজাল্ট করব নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু প্রথম দশ জনের মধ্যে আসব স্বপ্নেও ভাবিনি।” আর্থিক প্রতিকুলতার জন্যই সমৃদ্ধির উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তায় তার বাড়ির লোকেরা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy