পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে ধূপগুড়ির নিহত ছাত্রীর বাবা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে কলকাতার ট্রেনে চাপলেন রবিবার বিকেলে। আর সন্ধ্যাতেই পুলিশ গ্রেফতার করল ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অন্যতম দুই অভিযুক্তকে। বিরোধীদের কটাক্ষ, “হাইকোর্টের ধমক খাওয়ার ভয়েই কি পুলিশ হঠাৎ নিখোঁজদের খুঁজে পেল?”
গত ২ সেপ্টেম্বর ধূপগুড়িতে রেল লাইনের পাশ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীর পোশাকহীন দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ঘটনার আগের দিন তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে সালিশি সভায় ছাত্রীর বাবাকে মাররা হয়। পাওয়ার টিলারের ভাড়া সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই সভা বসেছিল। বাবাকে মারধরের প্রতিবাদ করায় ছাত্রীকে ‘থুতু চাটানোর’ হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এর পরেই সালিশি সভা থেকে ছাত্রী নিখোঁজ হয়ে যায় এবং পর দিন তার দেহ মেলে। এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতা-সহ ১৩ জনের নামে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা। কিন্তু, গোড়া থেকেই তদন্ত প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ ধূপগুড়ির সিপিএম বিধায়ক মমতা রায়ের সঙ্গে কলকাতা রওনা হওয়ার আগে নিহতের বাবা অভিযোগ করেন, “এত দিন পরেও সব অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। সুবিচার চাইতে হাইকোর্টে যাচ্ছি।” এ দিনই সন্ধ্যায় রেলপুলিশ ধরে পাওয়ার টিলারের ভাড়া নিয়ে নিহতের বাবার সঙ্গে বিবাদ যাঁর, সেই অনিল বর্মনকে। অন্য ধৃত বিজয় বসাকও ওই সালিশি সভায় ছিলেন। অথচ, এই দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে রেলপুলিশ এত দিন দাবি করছিল। পুলিশের দাবি, ‘গোপন সূত্রে’ খবর পেয়েই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই দুজনকে নিয়ে ধূপগুড়ি-কাণ্ডে ৭ জনকে ধরা হল।
এই ঘটনার পরে বিজেপি-র জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিকের মন্তব্য, “হাইকোর্টের ধমক খাওয়ার ভয়েই হয়তো শাসক দল আর পুলিশ অভিযুক্তদের ধরাল। বাকিদেরও শাসক দলই লুকিয়ে রেখেছে মনে হচ্ছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর দাবি, “প্রথম থেকে বলেছি, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। পুলিশ একের পর এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে।” ৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের আইনজীবী ভারতী মুৎসুদ্দির নেতৃত্বে বিদ্বজ্জনেদের এক প্রতিনিধিদল ওই ছাত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা হাইকোর্টে যেতে চান কি না তা জানতে চায়। ছাত্রীর বাবা-মা তাতে সম্মতি দেন। সিপিএমের ধূপগুড়ি জোনাল কমিটির সদস্য সঞ্জিত দে বলেন, “সোমবার মামলা দায়ের করা হতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy