চোপড়ায় যুগলকে মারধরের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে। — ফাইল চিত্র।
চোপড়াকাণ্ডে বুধবার রাতে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম তাহেরুল ইসলাম এবং আবদুল রফ। তাঁদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই। নিগ্রহের ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) ভাইরাল হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত জেসিবি ওরফে তাজিমুল ইসলাম-সহ চার জন গ্রেফতার হয়েছেন।
গত রবিবার দুপুরে চোপড়ার তৃণমূল নেতা তাজিমুলের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায়, এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে একছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার শুরু হচ্ছে মার। একই সঙ্গে এক তরুণকেও একই ভাবে মারতে দেখা যায় (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর শুরু হয়েছিল বিতর্ক।
ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পরে রবিবার রাতেই তাজিমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা যুক্ত, তার খোঁজও শুরু করে তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে আরও এক জনকে গ্রেফতার করে। চোপড়া থানার আইসি অমরেশ সিংহ জানান, নাককোটি এলাকা থেকে বুধাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলে জানান ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জুব্বে টমাস।
ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। আসরে নামে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। মঙ্গলবার চোপড়ায় নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই কারণে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন শিলিগুড়িতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চোপড়ায় না গিয়ে শিলিগুড়ি থেকেই ফিরে যান রাজ্যপাল। চোপড়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারকে একহাত নেন তিনি। বুধবার সংসদে এই নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘নীরব’ থাকার জন্য একহাত নেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে।
এই নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করেছেন মমতাও। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানকে ফোন করে ধমক দেন তিনি। উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, চোপড়ায় যাতে আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে চলতে হামিদুলকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও চোপড়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যদি দলের কোনও পদে থেকে থাকেন, তা হলে যেন অবিলম্বে তাঁকে সেই পদ থেকে ছেঁটে ফেলা হয়, এমনই নির্দেশ বিধায়ককে দিয়েছেন মমতা। চোপড়ার ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হামিদুলকে শোকজ় করেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এই আবহে গণপিটুনি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করেছেন মমতা। রাজ্যে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনায় পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই গণপিটুনি আটকাতে ব্যর্থ হওয়া পুলিশকে তিরস্কার করেছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy