প্রতীকী ছবি।
চতুর্ভুজা নয়, এখানে দশভুজা রূপে পুজিতা হন মহাকালী। মালদহের ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির এই পুজোকে ঘিরে বাড়তি আবেগ জড়িয়ে রয়েছে শহরবাসীর। পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য তথা প্রবীণ নাগরিক নটরাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য গঠন করা হয়েছিল ব্যায়াম সমিতি। ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করতে মহাশক্তির আরাধনা করেছিল তাঁরা। ইংরেজরা পুজো বন্ধের চেষ্টা করলেও তা পারেনি।” সেই সময় থেকে এখনও অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে দশ মাথার কালীর আরাধনা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইংরেজবাজার শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবাগ এলাকায় ১৯৩০ সালে স্থাপিত হয় ব্যায়াম সমিতি। ওই বছরই শুরু হয় মহাকালীর আরাধনা। সমিতির প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন বিপ্লবী কমলকৃষ্ণ চৌধুরী। তিনি শুরু করেছিলেন এই পুজোর। এখন তিনি না থাকলেও পুজো হয়ে আসছে সেই একই নিয়মে। এই সমিতিতে ব্যায়ামের পাশাপাশি লাঠি চালানো শেখানো হতো। প্রথমদিকে পুড়াটুলি এলাকায় গোপনে কালীপুজো এবং শরীরচর্চা চলত। পরে গঙ্গাবাগ এলাকায় নিজস্ব জায়গায় দেবীর আরাধনা শুরু হয়। পুজো বন্ধ করতে ইংরেজেরা তৎপর হলেও ব্যর্থ হয়েছিল।
প্রথম থেকেই এখানে অমাবস্যা শুরুর আগে অর্থাৎ চতুর্দশীতে দিনের বেলায় পুজো করা হয়। এখনও দিনের বেলায় একই তিথিতেই পুজো হয়। দেবীর মু্র্তি শুধু দশ মাথার নয়, হাত এবং পাও থাকে দশটি করে। দশ দেবীর শক্তিকে একত্রিত করার জন্য এমন প্রতিমা করা হয়েছিল বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। প্রতিমার আরও একটি বিশেষত্ব হল, এখানে শিব থাকে না। শুধু মাত্র মহাশক্তিরই আরাধনা করা হয়। প্রথম প্রতিমা তৈরি করেছিলেন রামকেষ্ট দাস এবং প্রথম পুরোহিত ছিলেন শরৎ পন্ডিত। বংশ পরম্পরায় তাঁদেরই পরিবার এখনও প্রতিমা তৈরি এবং পুজো করে আসছেন।
এ দিন শোভাযাত্রা করে ইংরেজবাজারের ফুলবাড়ি মোড় থেকে রাজমহল রোড হয়ে গঙ্গাবাগ এলাকায় দেবীর মন্দিরে প্রতিমা নিয়ে আসা হয়। সমিতির উদ্যোক্তা রাজীব ঘোষ, দিবাকর চক্রবর্তীরা বলেন, “এ বারের পুজোর বাজেট ছ’লক্ষ টাকা। তিনদিন ধরে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবীর পুজো করা হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy