দার্জিলিং পাহাড় থেকে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন দেখতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। ছবি: শাটারস্টক।
প্রতি বার শীতেই দার্জিলিং পাহাড়ের অন্য এক আকর্ষণ হল ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন। ম্যাল থেকে শুরু করে টাইগার হিল— সর্বত্রই পরিষ্কার আকাশে কাঞ্চনের উঁকিঝুঁকি। আর যেখানেই দেখা দিচ্ছে কাঞ্চন, সেখানেই থিকথিকে ভিড় হনুমান-টুপি আর মাফলারের। কনকনে ঠান্ডা গায়ে মেখে দার্জিলিং পাহাড়ে ভিড় বাড়ছে কাঞ্চনপ্রেমীদের। তবে এ বার পর্যটকেরা চেনা গতের বাইরে বেরিয়ে ঘাঁটি গেড়েছেন ‘অফবিট ডেস্টিনেশনে’। অর্থাৎ, দার্জিলিং শহর থেকে বেরিয়ে গ্রামের হোম স্টেতে থাকা এবং দিনভর কাঞ্চন-দর্শন।
কনকনে ঠান্ডা থাকলেও আকাশ একদম পরিষ্কার। সকালের দিকে কুয়াশার চাদর থাকলেও একটু বেলা বাড়তেই রোদ উঠছে। আপাতত বৃষ্টিপাত বা তুষারপাতের সম্ভাবনা নেই৷ কাজেই পরিষ্কার আবহাওয়ার কারণে ঝলমলে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলছে হরদম। পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু শুধুমাত্র দার্জিলিং হলেও ‘পকেট রুটে’ও পা বাড়িয়েছেন বহু পর্যটক। শুধুমাত্র ম্যাল বা টাইগার হিল বা চিড়িয়াখানার চিরচেনা ঘেরাটোপ নয়, দার্জিলিং পাহাড়ের প্রত্যন্ত গ্রামেও সময় কাটাচ্ছেন বহু মানুষ। মূল শহরের উপর পর্যটকদের চাপ খানিকটা কমলেও ‘অফবিট ডেস্টিনেশনে’ ভিড় রয়েছে এখনও। বিলাসবহুল হোটেলের বদলে ঘরোয়া মেজাজের হোম স্টে-তে থেকে সেখানকার স্থানীয় খাবারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শান্ত পরিবেশ উপভোগ করছেন পর্যটকেরা। অনেকে গন্তব্যের বেশ কিছুটা দূরে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে তার পর হেঁটে বা ট্রেকিং করে পৌঁছে যাচ্ছেন হোম স্টেতে।
চলতি মরসুমে চন্দু, ধোতরে, বিজনবাড়ি, সুখিয়াপোখরি, জোরপোখরি, কালপোখরি, লেপচা জগৎ, বিজনবাড়ি, জৌবাড়ির বিভিন্ন গ্রামগুলিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। পাশাপাশি নতুন বেশ কিছু জায়গায় হোম স্টে-ও তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে মাজুয়া, কোপিদারা, বুর্দুম, সাউজিখোলা পর্যটকদের নজর কাড়ছে। জৌবাড়ির বাসিন্দা তথা হোম স্টে মালিক নামচিক ভুটিয়া বলেন, ‘‘এ বার বিভিন্ন ‘অফবিট ডেস্টিনেশনে’ পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় হয়েছে। আমরা এখন বুকিং খুব ভেবেচিন্তে নিচ্ছি।’’ বুর্দুমের এক হোম স্টে মালিক বিনয় শেরপা বলেন, ‘‘শুধুমাত্র দার্জিলিং শহরকেন্দ্রিক না হয়ে পর্যটকেরা এখন একটু নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রামে থাকতেই বেশি পছন্দ করছেন। অনেক নতুন নতুন জায়গা হচ্ছে দার্জিলিঙেই। প্রচার কম হওয়ার কারণেই অনেকটা সময় লেগে গেল পর্যটকদের কাছে পৌঁছতে। তবে আমাদের এখানে এখনও যথেষ্ট ভিড় রয়েছে।’’
একই কথা জানাচ্ছেন ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে’র সম্পাদক সম্রাট সান্যাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দার্জিলিঙে এখন পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। তবে এ বার হোমস্টেগুলোতে প্রচুর পর্যটক ছিলেন। এখনও অনেকেই রয়ে গিয়েছেন। মূল শহরকে এড়িয়ে পাহাড়ি গ্রাম বেছে নিচ্ছেন বহু মানুষ। ফলে নতুন নতুন জায়গায় হোম স্টে-ও তৈরি হয়েছে। এটা ইতিবাচক ব্যাপার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy