রাজগঞ্জে গণপিটুনি।
গভীর রাতে সুনসান রাস্তায় এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবককে একা ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে, দেখা যায় যুবকের কিছু কথা অসংলগ্ন। তখনই শুরু হয় তাকে ধরে মারধর। যুবকটি তখন পালাতে গেলে তাঁকে ঘিরে ধরে আরম্ভ হয় গণপিটুনি। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজগঞ্জে ওই যুবককে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশও। পুলিশের ওপরে চড়াও হয় বাসিন্দাদের একাংশ। কুড়ুলের কোপ দিয়ে পুলিশের গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। পরে আরও বাহিনী এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জখম যুবককে পুলিশ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করেছে। গণপিটুনি এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। রাজগঞ্জের ঘটনা নিয়ে গত সাতদিনে জলপাইগুড়িতে পাঁচটি গণপিটুনির অভিযোগ উঠল।
জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “পুলিশের গাড়ির চালক সামান্য আহত হয়েছেন। সাত জনকে আমরা ধরেছি।” জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গণপিটুনিতে আরও কারা জড়িত রয়েছেন, তাঁদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত এগারোটা নাগাদ বানিয়াপাড়ায় এলাকায় এক যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তখন গ্রামের অনেক বাড়িরই আলো নিভে গিয়েছে। মোটামুটি সুনসান রাস্তায় তাঁকে দেখে সন্দেহ হয় বাসিন্দাদের। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, প্রশ্নের উত্তরে যুবক কিছু অসংলগ্ন কথা বলেন। অভিযোগ, তখনই বাসিন্দাদের কয়েক জন ওই যুবককে ছেলেধরা বলে দেগে দেয়। যুবকটি পালাতে চেষ্টা করলে শুরু হয় মারধর। মাটিতে ফেলে মারধর শুরু হয়। কয়েক জন ধারাল অস্ত্রও নিয়ে আসেন। তাতে ভয় পেয়ে অন্য বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ পৌঁছলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। বাসিন্দাদের কয়েকজন দাবি করতে থাকে, পুলিশের হাতে দিলে অভিযুক্ত ছাড়া পেয়ে যাবে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, ওই যুবককে ওখানেই পিটিয়ে আধমরা করার নির্দেশ দেন কয়েক জন মাতব্বর। অভিযুক্তের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন বেশ কয়েক জন। পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে ঢিল ছোড়া হয়, কুড়ুল দিয়ে আঘাত করে গাড়ির কাচও ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। পরে বড় বাহিনী এলে বাসিন্দাদের অনেকেই পালিয়ে যান।
কিন্তু মারধরের এমন প্রবণতাই উদ্বেগে রেখেছে পুলিশকে। এর আগে জলপাইগুড়ি শহরে চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছিল। ঝাড়ফুঁক করার নাম করে এক নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্তকে মেরেছিল বাসিন্দারা। সাইকেল চুরির অভিযোগে দুই নাবালককেও গণপিটুনি দেওয়া হয়েছিল জলপাইগুড়িতে। শহরের শান্তিপাড়াতে বিস্কুট চুরির অভিযোগে আরেক নাবালককে পিটিয়ে দেয় বাসিন্দারা। শহর লাগোয়া জয়পুর চা বাগানে ছেলেধরা সন্দেহে এক ভবঘুরেকে মারা হয়। আইন হাতে না তুলে নেওয়ার জন্য বারবার সচেতন করা হলেও, অনেক বাসিন্দাই তাতে কান দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তাই রাজনৈতিক দলগুলিকেও উদ্যোগী হতে বলছেন অনেক বাসিন্দা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy