Good room heater should be used to keep the house warm
Room Heater
ঘর উষ্ণ রাখতে রুম হিটার
এখন ফায়ার প্লেসের জমানা গিয়েছে, শীত এলেই বিক্রি বাড়ে বৈদ্যুতিন রুম হিটারের। আধুনিক পোর্টেবল রুম হিটারগুলির এখন ওজন কম, দামও আয়ত্তের মধ্যে এবং সহজলভ্য।
ঊর্মি নাথ
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:৪২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
শীতের মরসুমে ঘরের ভিতর উষ্ণ থাকলে বেশ স্বস্তি পাওয়া যায়, বিশেষত রাতে শোয়ার সময়ে উষ্ণ ঘর বেশ আরামদায়ক। এখন ফায়ার প্লেসের জমানা গিয়েছে, শীত এলেই বিক্রি বাড়ে বৈদ্যুতিন রুম হিটারের। আধুনিক পোর্টেবল রুম হিটারগুলির এখন ওজন কম, দামও আয়ত্তের মধ্যে এবং সহজলভ্য। কিন্তু রুম হিটার ব্যবহারে এখনও অনেকেই সড়গড় হননি। কত রকমের রুম হিটার হয়, তার ব্যবহার কী ভাবে করতে হয়, অনেকেরই সে বিষয়ে সম্যক ধারণা নেই। তাই কেনার আগে জেনে নেওয়া প্রয়োজন কোন ধরনের রুম হিটার আপনার বাসস্থানের জন্য উপযুক্ত।
হ্যালোজেন রুম হিটার: এই ধরনের রুম হিটার ইনফ্রারেড বা রেডিয়েন্ট রুম হিটার নামেও পরিচিত। ব্লোয়ার হিটারের মতো এগুলোতে শব্দ হয় না। অনেক বেশি শক্তিশালী। ছোট জায়গা তাড়াতাড়ি উষ্ণ করার জন্য উপযুক্ত। এই ধরনের রুম হিটারের ভিতর দিয়ে লাল আভা বেরোয়। তা দেখে মনে হয়, ঠিক যেন আগুন জ্বলছে! কাছে গেলেই গরম টের পাওয়া যায়। এই ধরনের রুম হিটার ছোট থেকে বড় বিভিন্ন আকারের হয়, ওজনও কম। শীতের আড্ডায় হ্যালোজেন হিটারের রক্তিম গরম আভা আগুনের বিকল্প হতেই পারে! তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, যে ঘরে হ্যালোজেন রুম হিটার চলছে সেই ঘরে যেন একা-একা কোনও শিশু বা পোষ্য না থাকে। হিটারের সামনে হাত লেগে গেলে পুড়ে যেতে পারে।
ফ্যান বা ব্লোয়ার রুম হিটার: এই ধরনের রুম হিটারকে কনভেকশন হিটারও বলা যায়। এর ভিতরে প্যানেল থাকে, যা উত্তপ্ত হয়ে হিটারের ভিতরের ফ্যান বা ব্লোয়ারের মধ্য দিয়ে গরম বাতাস সারা ঘরে ছড়িয়ে দেয়। এই ধরনের হিটার দ্রুত ঘর গরম করে। অন্যান্য হিটারের চেয়ে এটা দামেও কম। তবে ব্লোয়ার চলার আওয়াজ হবে, যতক্ষণ মেশিনটি চলবে। তবে সেটা অসহনীয় নয়। শিশু ও পোষ্যদের জন্য এই হিটার অনেকটা নিরাপদ।
অয়েল ফিলড রুম হিটার: বড় ঘর বা বড় জায়গার জন্য অয়েল ফিলড হিটার বেশ উপযুক্ত। এই হিটারের অভিনবত্ব হল, এতে ঘরের ভিতরে থাকা বাতাসের অক্সিজেনের মাত্রার পরিবর্তন হয় না এবং আর্দ্রতার মাত্রাও ঠিক থাকে। অয়েল ফিলড রুম হিটার বেশ শক্তপোক্ত এবং ব্লোয়ার হিটারের মতো আওয়াজ হয় না। কিন্তু এই ধরনের হিটারের দাম তুলনায় বেশি এবং ঘর গরম হতে সময় নেয়।
রুম হিটার ব্যবহারের কয়েকটা নিয়ম
রুম হিটার বৈদ্যুতিন যন্ত্র। তাই হিটার ব্যবহারের সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি।
দিনে বা রাতে সারাক্ষণ রুম হিটার চালিয়ে রাখবেন না। প্রয়োজনে তিন-চার ঘণ্টা একটানা চালানোর পরে বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার চালাতে পারেন। রুম হিটার চালিয়ে রাতে ঘুমোতে না যাওয়াই ভাল। বিছানায় শুতে যাওয়ার আগে ঘর গরম করে নিন।
বৈদ্যুতিন দ্রব্য কেনার সময়ে চিন্তা হয় সেটা ব্যবহারে বিদ্যুতের বিল কতটা বাড়বে। রুম হিটারের ক্ষেত্রেও তাই। তবে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে বিদ্যুতের অপচয় এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। রুম হিটার কেনার সময়ে খেয়াল রাখবেন, যত বেশি ওয়াটেজ তত বেশি বিদ্যুৎ পুড়বে। তাই কেনার আগে দেখে নিন কোন ঘরের জন্য রুম হিটার। ঘরের মাপ অনুযায়ী রুম হিটারের আয়তন ঠিক করলে বিদ্যুতের অপচয় কমবে। এই জন্য ওয়াটেজ নব সহ রুম হিটার কেনা যেতে পারে। এতে প্রয়োজন মতো ঘরের আয়তন অনুযায়ী তাপমাত্রা পরিবর্তনের জন্য ওয়াটেজ বাড়ানো বা কমানো যাবে। থার্মোস্ট্যাট থাকলে আরও ভাল। এতে প্রয়োজন মতো তাপমাত্রা সেট করে দিন, সেই তাপমাত্রায় এসে হিটার বন্ধ হয়ে যাবে।
যাঁদের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি বা কোনও রকম অ্যালার্জির মতো শারীরিক সমস্যা আছে তাঁরা নিয়মিত রুম হিটার ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
চলন্ত রুম হিটারের কাছ থেকে যে কোনও দাহ্য বস্তু, পর্দা, ইনডোর প্লান্ট দূরে রাখতে হবে। নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে শিশু ও পোষ্যদেরও। খেয়াল রাখবেন হিটার যখন চলবে তারা যেন সেই ঘরে একা না থাকে।
অধিকাংশ রুম হিটার বাতাসে আর্দ্রতা কমায়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। যাঁরা নিয়মিত রুম হিটার ব্যবহার করেন তাঁরা ত্বক স্বাভাবিক রাখতে ব্যবহার করবেন ময়শ্চারাইজ়ার, বডি অয়েল ইত্যাদি। যাতে শুষ্ক ত্বক থেকে কোনও সমস্যা না হয়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)