বালুরঘাটে টেট নিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: অমিত মোহান্ত
টেট উত্তীর্ণদের কাউন্সেলিং শুরু হতে খোদ তৃণমূলের মধ্যে থেকেই স্বজন পোষণের অভিযোগ উঠেছে। বালুরঘাটে এই অভিযোগ তুলেছেন এক শিক্ষক নেতা। শিলিগুড়িতে অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা ৫ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান রঞ্জন শীলশর্মা।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিং শুরু হতেই প্রক্রিয়ায় ধোঁয়াশার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ হয়। বিকেলে তৃণমূলের এক শিক্ষক নেতা দিব্যেন্দু সমাজদারের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা বালুরঘাট ডিপিএসসিতে ঢুকে সমস্ত অফিস কর্মীদের হুমকি দিয়ে ঘরে আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। ফলে কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। দিব্যেন্দুবাবু প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তবে শঙ্করবাবু দিব্যেন্দুবাবুর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে মানতে চাননি।
তৃণমূল নেতাই গোলমাল করায় এ দিন বালুরঘাটে ডিপিএসসি-তে শোরগোল পড়ে যায়। পুলিশ গিয়ে ডিপিএসসি থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে এক ঘণ্টা বাদে ফের কাউন্সেলিং শুরু হয়। সরকারি কাজে শাসক দলের শিক্ষক নেতার বাধা দেওয়ার অভিযোগের পেছনে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পছন্দের স্কুলে পোস্টিংয়ে লেনদেনের অভিযোগ সামনে আসায় বিষয়টি দল এবং জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্যের শিক্ষা দফতরে নালিশ জানানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) সুনীতি সাঁপুই জানান, এ দিন ২৫১ জন টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীর তালিকা পেয়ে পোস্টিং প্রক্রিয়া শুরু হয়। সরকারি নির্দেশ মতো এই জেলার ১০১টি ওয়ান-টিচার প্রাথমিক স্কুলে সর্ব প্রথম নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পোস্টিং দেওয়ার জন্য কাউন্সেলিং শুরু হয়। এরপর দুই শিক্ষক বিশিষ্ট স্কুলগুলি পূরণের প্রক্রিয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘পোস্টিং প্রক্রিয়া সরকারি নির্দেশ মেনে হচ্ছে। ধোঁয়াশা কিংবা গোপনীয়তার কোনও বিষয় নেই।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে কাউন্সেলিং করে শিক্ষকদের পোস্টিং করতে ডিআইকে বলেছি। কোনও অন্যায় চাপ মেনে নেওয়া হবে না।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দলের কোনও শিক্ষক নেতা প্রার্থীদের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া ভণ্ডুল করার চেষ্টা করলে, তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে বলেছি।’’ অভিযুক্ত তৃণমূলের শিক্ষক নেতা দিব্যেন্দুবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘টাকার বিনিয়মে একাংশ শিক্ষককে পছন্দের পোস্টিং দিতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে ডিপিএসসিতে গোলমালের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তা সম্পুর্ণ মিথ্যা। কেননা আমি কাউকে টেটের নিয়োগপত্র দেইনি।’’
শিলিগুড়িতে রঞ্জনবাবুর অভিযোগ, ‘‘তালিকা মতো পরপর প্রার্থীদের ডাকা উচিত। তা করা হচ্ছে না। যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি এই সরকারকে বদনাম করতে চাইছেন।’’ রঞ্জনবাবুর তাঁর অভিযোগ, ছাত্র শিক্ষক অনুপাতেও স্কুলগুলিতে নতুন শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে না। যেখানে নাম মাত্র পড়ুয়া, পর্যাপ্ত শিক্ষকও রয়েছেন, সেখানে ফের শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে। যেখানে শিক্ষকের অভাব, সেখানে নতুনদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর দাবি, একটি স্কুলে ১০০ জন পড়ুয়ার জন্য ৪ জন শিক্ষক আছেন। আরও জন শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম মাফিক ৪০ জন পড়ুয়া পিছু ১ জন শিক্ষক থাকবে। একই ভাবে আরও একটি স্কুলে জনা ২৫ পড়ুয়ার জন্য ৩ জন শিক্ষক আছে। তাদেরও নতুন শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে, অন্য একটি স্কুলে ২৫ জন পড়ুয়ার জন্য ৩ জন শিক্ষক থাকলেও আবার সেখানে ২ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তরফে জানানো হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা বিভাস রায় বলেন, ‘‘সঠিক ভাবেই নিয়োগ হচ্ছে বলে জেনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy