—প্রতীকী ছবি
উলেন রায় বিজেপি কর্মী নন, তিনি সারাদিন ‘মদ্যপ’ অবস্থায় থাকতেন বলে মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিধায়ক খগেশ্বর রায়। একই সঙ্গে তিনি বিমল গুরুং প্রসঙ্গে বলেন, “২০১৬ সালে বিধানসভায় এবং ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে গুরুংয়ের সমর্থন থাকলে আমাদের পাহাড়, ডুয়ার্সের আসনগুলি হারাতে হত না। এ বার গুরুংয়ের সমর্থন পেলে পাহাড়ে তো বটেই, ৮৩ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা থেকে শুরু করে মালবাজার, নাগরাকাটা, কালচিনি, জলপাইগুড়ি— সব আসনেই জিতব।”
সোমবার জেলা তৃণমূল অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে ডেকে অমিত শাহকে জবাব দিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বরকে। সঙ্গে ছিলেন দলের মুখপাত্র সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ। সেই সাংবাদিক বৈঠকেই এমন সব মন্তব্য করেন খগেশ্বর।
বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে গিয়ে মৃত উলেন রায়ের প্রসঙ্গ সাংবাদিক বৈঠকে খগেশ্বরই তোলেন। তিনি বলেন, “এই তো ক’দিন আগে উত্তরকন্যা অভিযান করল বিজেপি। উলেন রায় বিজেপি কর্মী না। আমরা যেটা জানি, শুনি, তিনি ওই এলাকায় সবসময়ে মদ্যপ অবস্থায় থাকতেন। বাইরে থেকে আনা অসম-বিহারের লোকের গুলিতে তিনি মারা যান।”
খগেশ্বর যখন বলছেন, তখন পাশে বসা মুখপাত্র দুলাল দেবনাথ বেশ কয়েকবার থামাতে চেষ্টা করেন। যদিও খগেশ্বর নিজের কথা বলেই চলেন। খগেশ্বরের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “যে নেতারা উলেন রায়কে মদ্যপ বলছেন তাঁরা আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন। গুরুং নিয়ে তৃণমূলের মনের কথা খগেশ্বর বলে ফেলেছেন। এর পরে পাকিস্তানের মৌলবাদী শক্তিদের কথাও তৃণমূলের মুখে শোনা যাবে।”
ক’দিন আগে মালবাজারের তৃণমূল নেতারা গুরুংয়ের প্রার্থী সম্পর্কিত মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, দলের প্রার্থী নিয়ে কথা বলার গুরুং কেউ নন, তাঁর সমর্থন তৃণমূল চায়নি বলেও দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়। তার দু’দিন পরেই খগেশ্বরের এই মন্তব্য।
স্থানীয় অনেকেই বলছেন, এই দফায় তৃণমূল ছেড়ে যে নেতারা বিজেপিতে গেলেন, তার আগে থেকেই খগেশ্বরের সম্পর্কে শোনা যাচ্ছিল, তিনি বিক্ষুব্ধ। এখন তিনি এমন সব কথা বলছেন, যাতে তাঁর দলেরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও দ্রুত জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা খগেশ্বরের বক্তব্যকে সমর্থন করেন না। খগেশ্বরের সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীনই তৃণমূলের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাস্কর সরকার ফোন করে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পরে দুলালকে অনুরোধ করেন, খগেশ্বরকে থামিয়ে তিনি যেন কথা বলেন। কিন্তু খগেশ্বরকে থামানো যায়নি। জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “খগেশ্বরবাবু যদি এ সব কথা বলে থাকেন, তবে সেটা একেবারেই তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। এগুলো পার্টির বক্তব্য নয়।” সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্ব খগেশ্বরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘বলতে গিয়ে কোথাও হয়তো ভুল হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy