নিহত রাজবংশী যুবক রাজকুমার বর্মণের বাবা-মাকে মঞ্চে ডাকেন অভিষেক। ছবি: ফেসবুক।
বিএসএফের গুলিতে স্থানীয় যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং তাঁর ডেপুটি তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানালেন, ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে বিচার পাইয়ে দেবেন নিহতের পরিবারকে।
শনিবার কোচবিহারের মাথাভাঙার কলেজ ময়দানের সভামঞ্চ থেকে হঠাৎই স্থানীয় এক যুবকের নাম নেন অভিষেক। সভায় উপস্থিত জনতার কাছে তিনি জানতে চান, প্রেমকুমার বর্মণ নামে কাউকে তাঁরা চেনেন কি না। এর পর নিজেই ওই যুবকের ‘পরিচয়’ এবং ‘পরিণতি’র কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক। তিনি জানান, দিনহাটা-১ ব্লকের গীতলদহ এলাকার ভারবাঁধা গ্রামের বাসিন্দা যুবক প্রেমকুমারের মৃত্যু হয় বিএসএফের গুলিতে। ২৩ বছরের ওই যুবক ভিন্ রাজ্যে কাজ করতেন। বাড়ি এসে মাঠে ঘুরতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘‘বেঙ্গালুরুতে কাজ করতেন। ৪ বছর পরে বাড়ি ফিরেছিলেন। গত ২৪ ডিসেম্বর সকালবেলা মাঠে ঘুরতে গিয়েছিলেন। এক-দু’হাত দূর থেকে বিএসএফের জওয়ানরা তাকে গুলি করে মেরেছে। আপনারা কেউ জানেন?’’ অভিষেকের সংযুক্তি, ‘‘বিএসএফের উপদ্রবের কথা আপনারা সবাই জানেন। কিন্তু এই যে নির্দোষ রাজবংশী যুবককে হত্যা করল কেন্দ্রীয় বাহিনী, আর যে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল রাজবংশীদের দরদ দেখায় আমি তাদের প্রশ্ন করছি, প্রেমকুমার কে ছিলেন? জঙ্গি? মাঠে যখন গিয়েছিলেন, তাঁর কাছে বোমা-বন্দুক উদ্ধার হয়েছে? গরু পাওয়া গিয়েছে? সোনা পাচার করতে গিয়েছিলেন?’’
এর পর স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উদ্দেশে কটাক্ষ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘৫০টা ক্যামেরার সামনে বুক ঠুকে বলে যাচ্ছি, তোমাদের স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করো। উদাহরণ তুলে ধরলাম এই কারণে যে, প্রেমকুমারের পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্তের) রিপোর্ট আমি হাতে নিয়ে এসেছি। সেই রিপোর্ট দেখে আমি হতবাক। রিপোর্ট বলছে, তার শরীর থেকে ১৮০টি বুলেটের টুকরো পাওয়া গিয়েছে! ভাবুন, কী নৃশংস ভাবে একটা বাচ্চা ছেলেকে মেরেছে!’’ অভিষেকের হুঁশিয়ারি, এর শেষ দেখে ছাড়বেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘এর শেষ দেখতে চাই আমরা। যে অফিসার জড়িত আছেন, কেউ ছাড়া পাবেন না। এটা গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেও আমি জানাব। হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট— এর জন্য যত দূর যেতে হয় যাব।’’
এর পরেই ওই নিহত যুবকের বাবা-মা শিবেন বর্মা এবং সুখীমণি বর্মাকে মঞ্চে ডেকে নেন অভিষেক। তাঁর মায়ের কাঁধে হাত রেখে প্রশ্ন করেন, ‘‘এঁকে দেখে কী মনে হয়, এঁর গর্ভে জঙ্গি জন্মাবে? এই পরিবারকে দেখে কী মনে হয়?’’ নিহতের বাবা শিবেন বর্মণ বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে গুলি করে মারা হয়েছে। বিনা দোষে... যদি দোষ থাকত, ওকে বেঁধে রাখত, সাজা দিত, ওকে মারল কেন?’’ সেই কথার রেশ ধরে অভিষেক বলেন, ‘‘যিনি এই কাজ করেছেন, তাঁর মাথায় যদি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও হাত থাকে, আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’ অভিষেক জানান, আগেই এফআইআর হয়েছে। এক-দু’মাসের মধ্যে এর শেষ দেখব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আজ থেকে কোচবিহারের দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy