একেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় শঙ্কর চক্রবর্তীর পুত্রবধূ তথা পুর-প্রতিনিধি প্রদীপ্তাকে নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দলের মেঘ দেখা দিয়েছে দলে। এরই মধ্যে বুধবার রাতে বালুরঘাটে ’অভিষেক ফ্যান ক্লাব’ নাম দিয়ে একটি নতুন পোস্টার ফের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করল শাসক দলে। পোস্টারে লেখা— আমরা কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লবি করি, অন্য কোনও নেতার তাবেদারি নয়। এতেই নতুন করে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে বলেও মনে করছেন অনেকেই।
দণ্ডী-কাণ্ডে নাম জড়ানো প্রদীপ্তা চক্রবর্তী আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন এক বছর আগে। কিন্তু তিনি দলীয় কর্মসূচিতে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিপ্লব মিত্র এবং তার বিরোধী শিবিরের নেতারা। বিপ্লব মিত্র শিবিরের নেতারা তাঁকে দলীয় নানা কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার কথা বললেও তা মানছেন না তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। এরই মধ্যে পোস্টার অশান্তির আগুনে নতুন করে ঘি ঢেলেছে। ’অভিষেক ব্যানার্জী’ ফ্যান ক্লাবে কারা রয়েছেন, তাও সারা দিনে শাসক দলের নেতাদের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট হয়নি। যদিও, এই পোস্টার সমর্থন করছেন বিপ্লব বিরোধী শিবিরের নেতারা।
দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা কমিটির সদস্য মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘কারা পোস্টার দিল জানি না। তবে কথাটা ভুল কিছু বলেনি। সত্যিই তো আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করি। অন্য কারও নয়।’’ পোস্টারের বক্তব্য সমর্থন করেছেন ছাত্র জেলা টিএমসিপি সভাপতি অমরনাথ ঘোষ। তিনি এই দিন বলেন, ‘‘আমি জেলার বাইরে রয়েছি। তবে এটা ঠিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের আদর্শ। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন আমাদের ছাত্র-যুব আইকন। তাঁদের নির্দেশই দলে শেষ কথা।’’
শাসক দলের বিপ্লব মিত্র শিবির মনে করছে, দলের নির্দেশ ছাড়া এ রকম পোস্টার দলের কেউ দিতে পারে না। জেলা তৃণমূল সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘‘আমরা সকলেই মমতা-অভিষেকের অনুগামী। কিন্তু এ রকম পোস্টার নতুন করে বিভ্রান্তি, অশান্তি বাড়ায়। এ সব থেকে বিরত থাকাই ভাল।’’ বালুরঘাটের নেতা তথা জেলা সহ সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, ‘‘দল কথাটি না লিখে 'লবি' কথাটা ঠিক নয়। এতে উপদল বা গোষ্ঠী বোঝায়। পোস্টারের বাকি অংশ নিয়ে কোনও আপত্তি নেই।’’
বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ এই পোস্টার নিজেদের সমাজ মাধ্যম প্রোফাইল থেকে শেয়ার করতে শুরু করেছেন। তাতে তৃণমূলের একটি অংশ মনে করছে, এই কাজ বিজেপির তরফেও হয়ে থাকতে পারে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)