জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে কথা বলছেন অভিষেক। ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
শিলিগুড়ি থেকে ধূপগুড়ির দিকে যাচ্ছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি। জলপাইগুড়িতে তিস্তা সেতু পেরিয়ে দোমহনি হাটের কাছে হঠাৎই তাঁর কনভয় থেমে যায়। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে সটান হাটের মধ্যে ঢুকে যান অভিষেক। স্থানীয়রা অভিষেককে দেখে প্রাথমিক ভাবে হকচকিয়ে যান। তার পর সাংসদকে খুলে বলেন সুবিধা অসুবিধার কথা। হাটের কাজ অসমাপ্ত দেখে স্থানীয়দের কাছ থেকেই ফোন নম্বর চেয়ে অভিষেক সটান ফোন করেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মণকে। দেড় মাসের মধ্যে বকেয়া কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। জানিয়ে দেন, তিনি আবার এসে সরেজমিনে খোঁজ নেবেন, কাজ কতদূর এগোল। তার পর স্থানীয়দের সঙ্গে আরও কিছু ক্ষণ সময় কাটিয়ে রওনা দেন ধূপগুড়ির দিকে। স্থানীয়রা অভিষেকের এই ‘মমতা-স্টাইলে’ জনসংযোগ দেখে অবাক!
জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় যাওয়ার পথে আচমকাই ময়নাগুড়ি ১ নম্বর ব্লকের দোমহনি হাটে অভিষেকের দাঁড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও এ দিন আরও একাধিক জনসংযোগ কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদককে। এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে চা খাওয়ার পাশাপাশি ধূপগুড়ি শহরেও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শোনেন অভাব-অভিযোগের কথা। যান একটি মন্দিরেও। সেখানে একটি শিশুকে আদর করতেও দেখা যায় অভিষেককে।
এত দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিরাপত্তার বেড়া টপকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে দেখতে অভ্যস্ত দেশ। বস্তুত, সেটাই তৃণমূল নেত্রীর রাজনীতির ‘ট্রেডমার্ক’। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন কায়দায় জনসংযোগ সেই অর্থে প্রথম। নেটমাধ্যমে সাবলীল হলেও এ ভাবে মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ এর আগে কবে করতে দেখা গিয়েছে অভিষেককে, তা মনে করতে পারছেন না রাজনীতির কারবারিরাও। রাজনীতির অঙ্ক বলছে, গত বিধানসভা ভোটে গোটা রাজ্যে দুর্দান্ত ফল করলেও উত্তরবঙ্গের এই অংশে মোটেও ভাল ফল হয়নি তৃণমূলের। এ বার তাই উত্তরবঙ্গকে পাখির চোখ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধূপগুড়ির সভায় একাধিক বার বলেছেন, এ বার নিয়মিত ভাবে এই এলাকায় দেখা যাবে তাঁকে। ক্ষমা চেয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কৃতকর্মের জন্য। মেনে নিয়েছেন তাঁর দলের ব্যর্থতাতেই এই এলাকায় বিজেপির রমরমার কথাও। সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশেও আরও এক বার সেই বার্তাই পৌঁছে দিতে চাইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy