পাশাপাশি: দলীয় মতপার্থক্য ভুলে জন্মাষ্টমীর মিছিলে হাঁটলেন (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়) পুরাতন মালদহ শহর তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিভূতিভূষণ, বিজেপির সাংসদ খগেন এবং কংগ্রেসের বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ। নিজস্ব চিত্র
জন্মাষ্টমীর উৎসবে এক সঙ্গে পথে নামলেন তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপির নেতারা। একই মিছিলে দেখা গেল তাঁদের। শোভাযাত্রাটির আয়োজন করেছিল বাচামারি রাধাগোবিন্দ মন্দির কমিটি। এই প্রাচীন মন্দিরের আয়োজনে বহু কাল ধরেই এই শোভাযাত্রা হচ্ছে। আগেও সেখানে স্থানীয় কংগ্রেস ও তৃণমূলের নেতাদের দেখা গিয়েছে। এ বার সেখানে যোগ দিয়েছেন বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মুও। খগেনবাবু আগে বামপন্থী ছিলেন, তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র হবিবপুরও এই এলাকা থেকে বেশ দূরে। এ দিন তাঁকে দেখা গেল, ‘সমগ্র এলাকার কৃষ্ণ ভক্ত’-দের নামে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা লেখা ব্যানার ধরে তৃণমূল ও কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গেই হাঁটতে। প্রায় সাত কিলোমিটার ধরে এই শোভাযাত্রায় সকলেই হেঁটেছেন।
জেলার ব্লকে ব্লকেও একই ভাবে শোভাযাত্রা হয়েছে। সেগুলিতেও বিজেপির নেতা-নেত্রীদের দেখা গিয়েছে। মানিকচক সহ বেশ কিছু ব্লকে রামনবমীর শোভাযাত্রায় তৃণমূলের কিছু নেতাকেও শামিল হতে দেখা গিয়েছিল। সেই রামনবমীর কায়দাতেই জন্মাষ্টমী উৎসবকে মালদহে জনসংযোগের কাজে লাগালেন বিজেপি, তৃণমূল ও কংগ্রেসের নেতারা। এদিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে ইংরেজবাজারেও একটি বড় শোভাযাত্রা হয়েছে।
তবে সবচেয়ে বড় শোভাযাত্রা হয় পুরাতন মালদহ শহরে রাধাগোবিন্দ মন্দিরের উদ্যোগে। পালপাড়া থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয় সকাল ন’টায়। তার আগেই সেখানে পৌঁছেছিলেন মালদহের কংগ্রেস বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার, তৃণমূলের পুরাতন মালদহ শহর কমিটির চেয়ারম্যান বিভূতিভূষণ ঘোষ, বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি শ্যামচাঁদ ঘোষরা। শোভাযাত্রা কিছুটা এগোতেই তাতে শামিল হন উত্তর মালদহের সাংসদ বিজেপির খগেনবাবু। মির্জাপুর মোড়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন পুরাতন মালদহের পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ। শোভাযাত্রায় ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল সহ একাধিক জেলা, ব্লক ও শহর মন্ডল কমিটির নেতা-কর্মীরা। শোভাযাত্রাটি পালপাড়া থেকে নতুনপল্লি, সারদা কলোনি, খইহাট্টা, ঘোষপাড়া, বুলবুলি রোড, মঙ্গলবাড়ি, বাঁধরোড হয়ে ফের পালপাড়ায় এসে শেষ হয়। দু’পাশের মানুষকে প্রণাম জানাতে ভোলেননি কোনও নেতাই।
কিন্তু কেন তাঁরা রাজনৈতিক বিরোধীদের সঙ্গে এক শোভাযাত্রায় হাঁটলেন?
সাংসদ বলেন, ‘‘রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা মানুষের নানা কর্মসূচিতে শামিল হই। ঠিক তেমনি ভাবেই এ দিন জন্মাষ্টমী উৎসবে হাজির হয়েছি।’’ ভূপেন্দ্রনাথও বলেন, ‘‘এখানে রাজনীতি নেই। পালপাড়ার এই উৎসবে আমি প্রতি বছরই সামিল হই। শোভাযাত্রায় হেঁটে অসংখ্য মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, বাড়তি পাওনা এটাই।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমাদের শহরে জন্মাষ্টমীর এই উৎসব বরাবর প্রাণবন্ত। আমরাও আসি প্রতি বছর। দলের কোনও বিষয় এখানে নেই।’’ মন্দির কমিটির নিত্য পাল বলেন, ‘‘আমাদের রাজনৈতিক বাছবিচার নেই। সবাইকেই ডাকি।’’
নেতারা যাই বলুন না কেন, রাজনৈতিক মহল অবশ্য বলছে, আগামী বছরই পুরাতন মালদহ পুরসভায় নির্বাচন। তাই জন্মাষ্টমীর মত উৎসবকে জনসংযোগের কাজে লাগাল সংশ্লিষ্ট দলগুলির নেতা-নেত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy