নিখোঁজ তিন: (উপর থেকে) তনুজ সিংহ, রুদ্রনীল সরকার ও ইন্দ্রনীল ঘোষ।
বাগডোগরা থানার রানিডাঙার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম আবাসিক স্কুল থেকে একযোগে নিখোঁজ হয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির তিন ছাত্র। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন স্কুলের অধ্যক্ষ শমিতা রাই। শুক্রবার রাতেই স্কুলের পক্ষ থেকে বাগডোগরা থানায় একটি ‘মিসিং ডায়েরি’ করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিকল্পনা করেই পালিয়ে গিয়েছে তিন ছাত্র। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ইউনিট টেস্ট শুরু হওয়ার কথা। শিলিগুড়ির পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
ঘটনায় স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। নিখোঁজ ছাত্র ইন্দ্রনীল ঘোষের বাড়ি বিহারের কিসানগঞ্জে, রুদ্রনীল সরকারের বাড়ি শিলিগুড়ির বিধাননগরে এবং তনুজ সিংহের বাড়ি ইসলামপুরে। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, হস্টেল থেকে পালিয়ে ছাত্ররা শিবমন্দির এলাকায় কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারে। আমাদের লোকেরা খোঁজ শুরু করেছে।’’
স্কুলের ডিরেক্টর সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, আবাসিকদের জন্য স্কুলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত বিশেষ ক্লাস চলে। তার আগে খেলার জন্য ঘণ্টা দেড়েক সময় পায় ছাত্ররা। সঞ্জয়ের দাবি, শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদও তিন ছাত্রকে হস্টেলে দেখা গিয়েছিল। ক্লাসের সময় তাদের অনুপস্থিতি নজরে আসে।
নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এই স্কুলে। অধ্যক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে স্কুলে প্রায় ৯০০ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। হস্টেলে থাকে প্রায় ২৫০ জন। পার্শ্ববর্তী জেলা বা রাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশ থেকেও ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে ওই স্কুলে। নিখোঁজ এক ছাত্র ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ওই স্কুলে পড়ত। বাকি দুই ছাত্র একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। তবে কী ভাবে তিন ছাত্র নিখোঁজ হয়ে গেল, তা নিয়ে এখনও রহস্য কাটেনি।
নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই স্কুলে পৌঁছয় বিধাননগরের ছাত্র রুদ্রনীলের পরিবার। তার মা মনীষা সরকার বলেন, ‘‘প্রায় সাত বছর হল ছেলে স্কুলে পড়ছে। আগে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে এখন স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এত ঢিলেঢালা হয়ে গিয়েছে সেটা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। স্কুলে বা হস্টেলে কোনও সমস্যা হয়েছে বলে আমরা জানি না।’’ ইন্দ্রনীলের বাবা স্বরূপ ঘোষ বলেন, ‘‘স্কুলের নিরাপত্তা ও নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার ছিল। ছেলে কী ভাবে নিখোঁজ হল তা বুঝতে পারছি না। স্কুলে কোনও গোলমাল হয়েছে বলে আমাদের জানায়নি।’’
ওই স্কুলের পিছন দিকে একটি মাঠ আছে। সেই মাঠে প্রতিদিন আবাসিকরা খেলাধুলো করে বলেই জানিয়েছেন স্কুলের অধ্যক্ষ। ওই মাঠে যাওয়ার জন্য স্কুলের প্রশাসনিক ভবনের পাশে একটি গেট আছে। যদিও সেই গেটে বা খেলার মাঠে কোন ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা নেই বলেই জানিয়েছেন স্কুলের ডিরেক্টর। স্কুলের পিছনের দিকে নির্মাণ কাজও চলছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই অংশে কেন সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। বছর দেড়েক আগে ওই স্কুলের দুই ছাত্র স্কুটি নিয়ে ফেরার সময় দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল। তখনও স্কুলের নজরদারি নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। স্কুলের ডিরেক্টর বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে যে সব ত্রুটি আছে সেগুলি শুধরে নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy