কাজ চলছে একটি চা বাগানে। —ফাইল ছবি।
নতুন করে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চুক্তি পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার, এবং শ্রমিক-মালিক পক্ষের দশ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে মোট ত্রিশ জনের কমিটি হয়েছে। এ বারই প্রথম ন্যূনতম মজুরি নির্ধারক কমিটিতে রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র চা চাষিদের প্রতিনিধিদের৷ এই কমিটিই স্থির করবে, রাজ্যের চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কত হবে।
এই কমিটি গঠন নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক রয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা হয়নি। বিরোধী সংগঠনগুলির দাবি, আগের কমিটি শ্রমিক-মালিক সব পক্ষের বক্তব্য শুনে নথিবদ্ধ করেছে। শুধু ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা বাকি। সে প্রেক্ষিতে নতুন করে কমিটি ঘোষণার কী প্রয়োজন, সেই প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনগুলি। কমিটিতে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে দশ জন রয়েছেন, বিরোধী সংগঠনের এক জন করে প্রতিনিধি থাকলেও, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রয়েছে চার জন।
রাজ্যের শ্রম দফতরের এক কর্তা বলেন, “পুরনো কমিটির মেয়াদ ফুরিয়েছিল, সে কারণে নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। এটি বিধিবিদ্ধ প্রক্রিয়া। কমিটি নিজস্ব প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নেবে।”
রাজ্যের চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৫ সালে প্রথম ন্যূনতম মজুরি নির্ধারক কমিটি গঠন হয়। প্রতিবারই কমিটি হয়েছে এক-দু’বছরের মেয়াদে৷ কমিটির একাধিক বৈঠক হয়েছে, যদিও ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা হয়নি। শ্রম দফতর সূত্রের খবর, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তবে সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে, কিছু ক্ষেত্রে ফের আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
বর্তমানে এক জন চা শ্রমিক দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরি পান। ছোট চা বাগানের শ্রমিকেরা ২০২-২১২ টাকা মজুরি পান। এ বার মজুরি নির্ধারণ কমিটিতে ক্ষুদ্র চা বাগানের প্রতিনিধিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজ্যের চা উৎপাদনের বেশিরভাগটাই জোগান দেয় ক্ষুদ্র চা বাগান। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র তরফে বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “এত দিন মজুরি-চুক্তি নিয়ে আমাদের কথাই শোনা হয়নি। এ বার আমরা মজুরি নিয়ে মতামত জানাতে পারব।”
চা শ্রমিক সংগঠন ‘এনইউপিডব্লিউ’-এর তরফে মণিকুমার ডার্নাল বলেন, “শাসক দল নিজেদের প্রতিনিধিদের বেশি করে রেখে কমিটি গড়ল ঠিকই, কিন্তু ন্যূনতম মজুরি তো আর ঘোষণা হল না।” আরএসপির শ্রমিক সংগঠনের তরফে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মনোহর তিরকে বলেন, “কমিটির পরে কমিটি হয়। কিন্তু শ্রমিকেরা ন্যূনতম মজুরি পান না।” তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা নকুল সোনার বলেন, “বিরোধীরা যা ইচ্ছে বলতে পারে। তবে যত বারই বৈঠক হয়েছে, তত বার মজুরি বেড়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy