জলপথে-২: শিলিগুড়ির অশোকনগরে ভারী বৃষ্টির জল জমে রয়েছে রাস্তা ও বাড়িতে। ছবি: বিনোদ দাস।
সকালে ঝলমলে ছিল আকাশ। সামান্য রোদও উঠেছিল। বিকেল ৪টে নাগাদ হঠাৎ মেঘলা হয়ে আসে আকাশ। হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রকৃতির রূপ পাল্টে যায়।
যে ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়, তাতে এই বৃষ্টি যে আর পাঁচটা দিনের মতো নয়, তা বুঝে গিয়েছিলেন শহরবাসী। শেষ কবে এমন বৃষ্টি দেখেছিলেন তা মনে করতে পারেননি অনেকে। সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ বৃষ্টির বেগ ক্রমেই বাড়তে শুরু করে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে ততক্ষণে বাড়ি বাড়িতে ঢুকতে শুরু করে জল। বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, ক্ষুদিরামপল্লি, হায়দারপাড়া, চম্পাসারি, হকার্স কর্নারের দোকানগুলিতে জল ঢোকে। কোনও ভাবে ব্যবসায়ীরা কিছু জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। যে ভাবে জল দোকানে ঢোকে তাতে আতঙ্কে দোকান ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কর্মীরা। সন্ধে ৭টা নাগাদ বিধান মার্কেট, ক্ষুদিরামপল্লিতে কোমর সমান জল। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সামনে, হাসপাতাল মোড়ে রাস্তার উপর প্রায় ৪ ফুট জল জমে যায়। রাস্তায় রাখা বাইকগুলি জলে ডুবে যায়। আশ্রমপাড়ার কাছে হাইড্র্যান্টে পড়ে যায় একটি গাড়ি। আধঘণ্টার মধ্যে শহরের পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে। চারিদিকে তখন শুধু জল।
রাত ৮টা নাগাদ হাসপাতাল মোড়ের কাছে রোগী নিয়ে যাওয়ার পথে জলে আটকে যায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। সেখানে বহু গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। পরে এগিয়ে আসেন কিছু স্থানীয় যুবক। গাড়িগুলিকে ঠেলে সেখান থেকে বের করেন। এ দিকে ততক্ষণে সূর্য সেন কলোনি, অশোকনগর, দুর্গাদাস কলোনি, বাঘাযতীন কলোনি, শক্তিগড়-সহ বহু এলাকা জলে ডুবে গিয়েছে। ঘরে ঘরে জল ঢুকে যায়। ক্ষোভে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এনজেপি রোড অবরোধ করেন ৩৪ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতে এলাকায় যান ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার। তাঁর কথা, ‘‘পুরসভায় বাম বোর্ড থাকাকালীন কোনও কাজ হয়নি। তার ফল এখন মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি।’’
সোমবার রাতভর পুরো শহরে জলবন্দি অবস্থায় ছিল। মাঝরাতে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় জল নেমে যায় অধিকাংশ এলাকায়। কিন্তু কিছু নিচু এলাকায় মঙ্গলবার দিনভর জল জমে ছিল। বিধান রোড, ক্ষুদিরামপল্লিতে পাম্প দিয়ে দোকানগুলি থেকে বের করা হয় জল। যদিও বৃষ্টির জেরে তেমন প্রভাব পড়েনি এনজেপি স্টেশন, তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে। কোনও ট্রেন বা বাস বাতিল হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy