Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bus Accident

‘রিপোর্ট চাই আমার’ দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির গতি নিয়ে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর

বাস দুর্ঘটনায় নিয়তি সরকার ও সায়লি হাঁসদা পুরাতন মালদহ ও কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। এ দিন গাজলে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে সরাসরি তাঁদের সরকারি সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল, দাবি প্রশাসনের।

An image showing the presence of West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee in Gazole

গাজলের প্রশাসনিক সভাশেষে মুখ্যমন্ত্রী-সহ সবাই জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন। ছবি: স্বরূপ সাহা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাজল শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৮
Share: Save:

মালদহের গাজলে ‘উপভোক্তা’ বোঝাই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার গাজল কলেজ মাঠে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের বক্তব্যের শুরুতেই দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমেই এই সভায় মর্মবেদনা জানাচ্ছি। আমরা সবাই দুঃখিত এবং শোকাহত। গতকাল এই অনুষ্ঠানে আসছিলেন, আমার পরিচিত দুই ভাইকে (প্রকৃতপক্ষে দু’জনেই মহিলা) আমরা হারিয়েছি বাস দুর্ঘটনার জন্য।’’ পরে তিনি জানান, মৃতেরা হলেন সায়লি হাঁসদা এবং নিয়তি সরকার।

মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘শুনেছি, খুব বাজে ভাবে চালানো (রাফ ড্রাইভ) হচ্ছিল। আর একটি গাড়ি ওভারটেক করছিল। আমি এটার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাই। এবং আমি ইতিমধ্যে ট্র্যাকিং সিস্টেম করেছি। কে আইন মেনে যাচ্ছে না, দুর্ঘটনার পথে যাচ্ছে।’’ এ ছাড়া, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং গোলাম রব্বানিকে তাঁদের বাড়িতেও পাঠিয়েছিলাম এবং তাঁরা আবার যাবেন। দেহ নিয়ে সঙ্গে যাবেন। জীবনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ করা যায় না। তবুও তাঁর পরিবারের হয়তো একটা বাচ্চা আছে, হয়তো মা আছে, হয়তো পরিবারের কেউ না কেউ আছে। তাঁদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এই দু’টি পরিবারকে দু’টি সরকারি চাকরি এবং দু’লক্ষ টাকা করে, আমি ফিরহাদকে বলব দিয়ে আসতে। এবং তাঁদের দু’টো আবেদন নিয়ে আসতে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, বাস দুর্ঘটনায় নিয়তি সরকার (৬০) ও সায়লি হাঁসদা (৪০) পুরাতন মালদহ ও কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। এ দিন গাজলে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে সরাসরি তাঁদের সরকারি সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল, দাবি প্রশাসনের। বাসে থাকা ৩১ জন দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন। তাঁদের অন্যতম পুরাতন মালদহের আকতার হোসেন বলেন, “চোখের আলো প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে আমার দশ বছরের ছেলের চশমা পাওয়ার কথা ছিল। প্রশাসন মহড়া দেওয়ার জন্য গাজলে নিয়ে যাচ্ছিল। বাসের গতি কমানোর জন্য চালককে অনুরোধও করা হয়েছিল।” কুশমণ্ডির বাসিন্দা জখম নন্দ সরকারের দাবি, “দুর্ঘটনার পাঁচ মিনিট আগে চালকের ফোন আসে। তার পরে, চালক আরও গতি বাড়িয়ে দেন।”

কী ভাবে দুর্ঘটনা? পুলিশের দাবি, বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ছোট গাড়িকে ধাক্কা মারে। গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এর পরে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি নয়নজুলিতে উল্টে যায়। প্রচণ্ড গতির জন্যই চালক নিয়ন্ত্রণ হারান বলে প্রাথমিক তদন্তে দাবি পুলিশের। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “চালকের খোঁজ চলছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

সম্প্রতি, হবিবপুরের শ্রীরামপুরের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের মিজ়োরামে কাজ করতে গিয়ে মারা যান। এ দিন মৃতদের পরিবারকে মঞ্চে ডেকে আর্থিক সাহায্য দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মিজ়োরাম সরকার পরিবারগুলির পাশে আছে কি না জানি না। আমরা পাশে আছি।” বাইরে কাজ করতে গেলে নাম, ঠিকানা লিখে দিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ রাজ্যে যে পরিমাণ কাজ আছে, তাতে এখন আর বাইরে গিয়ে কাজ করার প্রয়োজন পড়ে না বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্যে কাজ নেই। তাই শ্রমিকদের ভিন্-রাজ্যে যেতে হচ্ছে। আর একশো দিনে এত দুর্নীতি অন্যত্র হয়নি। সে কারণেই সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Accident Mamata Banerjee Gazole
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy