—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সকাল ৭টার পরেও সাইরেনের আওয়াজ পাচ্ছিলেন না সন্তোষী চিক বরাইক, অনিতা মুন্ডাদের মতো অন্য শ্রমিকেরা। তাঁরা দফতরের সামনে জড়ো হয়ে দেখেন, ম্যানেজার এবং অফিসের কর্মীরা ‘বেপাত্তা’। ক্ষোভে ফেটে পড়েন কয়েক হাজার
শ্রমিক। গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। শুক্রবার শিলিগুড়ির নকশালবাড়ি ব্লকের ত্রিহানা চা বাগানের ঘটনা।
শ্রমিক শোভামণি নাগ বলেন, ‘‘দীপাবলির আগে, এ ভাবে বাগান কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যাবেন, ভাবিনি। পুজোর বোনাস এবং মাসের মজুরি বাকি।’’ বাগান সূত্রের খবর, ত্রিহানা এবং জাবরা ডিভিশনে মোট আড়াই হাজার শ্রমিক। সেখানে মোট সাড়ে পাঁচশো এলাকায় চা বাগান রয়েছে। প্রত্যেক বছর ১২ লক্ষ কেজি চা উৎপাদন হয়। পুজোর আগে বোনাস দেওয়া হয়নি। শ্রমিকদের দাবি, গত ৯ নভেম্বর ১৮ শতাংশ বোনাস এবং এ দিন শ্রমিকদের ১৫ দিনের বকেয়া মজুরিও দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দিনের আলো ফোটার আগেই ভোরে মালিক পক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যান বলে অভিযোগ। আর তাতেই কালীপুজো, দীপাবলির আগে, যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে এই শ্রমিকদের মাথায়। তাঁরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন। বাগানের মালিক পক্ষের সঙ্গে এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজের।
শ্রম দফতর সূত্রে খবর, মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলির আলোচনায় ১৯ শতাংশ বোনাস ঠিক হলেও, কয়েকটি বাগান সে সিদ্ধান্ত মানতে চায়নি। ত্রিহানাতে মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হলেও ,সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষ বার গত ১ অক্টোবর দু’পক্ষের আলোচনায় ৯ নভেম্বরের মধ্যে আপাতত ১৮ শতাংশ বোনাসে সম্মতি জানিয়েছিল সব পক্ষ। বাকি এক শতাংশ দীপাবলির পরে, দেওয়ার কথা। সে জন্য ২২ নভেম্বর আলোচনার দিনও ঠিক হয়েছিল বলে জানান শ্রম দফতরের যুগ্ম শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক ঘটনা। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে।’’
আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্জল দে বলেন, ‘‘আমরা শ্রমিকদের আন্দোলনের পাশে রয়েছি। শ্রমিকদের বোনাস, বকেয়া না মেলা পর্যন্ত আন্দোলন চালবে।’’ দার্জিলিং জেলা সিটুর তরফে গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৭ সালেও এ ভাবেই ত্রিহানা বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছিলেন মালিক পক্ষ। সে বার রাজ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হলেও শ্রমিকেরা বকেয়া পাননি। এ বার মজুরি এবং বোনাস না মেলা পর্যন্ত শ্রমিকেরা ছেড়ে কথা বলবেন না।’’ টাই-এর (টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া) উত্তরবঙ্গ শাখা সম্পাদক সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে প্রশাসনকে
আবেদন জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy