ভাঙচুরের চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র।
কলেজে চলছিল পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড বিলি। সেইসময় একদল বহিরাগত যুবক কলেজে ঢুকে ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পালানোর সময় টিএমসিপির এক সমর্থককে অভিযুক্তরা মারধরও করেছে বলে অভিযোগ। সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ঘটনা।
আগামী ৩০মে থেকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। গত ২মে থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড বিলির কাজ করছেন। এ দিনও দু’টি বর্ষের বহু পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড নিতে কলেজের অফিসরুমে ভিড় করেছিলেন। চলছিল স্নাতকোত্তরের বিভিন্ন বিষয়েরও ক্লাসও। দুপুর তিনটে নাগাদ বহিরাগত একদল যুবক ছাত্র সংসদের ঘরে চড়াও হয়ে প্লাস্টিক ও কাঠের চারটি চেয়ার, চারটি বেঞ্চ, দু’টি টেবিল, একটি কাঠের রেক ও তিনটি আলমারি ভাঙচুর করে। ঘটনার জেরে পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বিধানসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। টিএমসিপির দাবি, এই কারণেই ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই-এর দুষ্কৃতীরা ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে ও এক ছাত্রকে আক্রমণ করে কলেজে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করতে চাইছে। টিএমসিপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অজয় সরকারের দাবি, ‘‘সাধারণ পড়ুয়ারা যাতে নির্বাচনে যোগ দিতে ভয় পান, সেই কারণেই বিরোধী ছাত্র সংগঠন কলেজে জোটবদ্ধ সন্ত্রাসের ছক করেছে।’ কিন্তু ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই-এর পাল্টা দাবি, ভাঙচুরের ঘটনা টিএমসিপি’র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। পাশাপাশি, কলেজের গেটে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও কীভাবে পরিচয়পত্র ছাড়া বহিরাগতরা কলেজের ভিতরে ঢুকতে পারল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক শুভঙ্কর চক্রবর্তী ও ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নব্যেন্দু ঘোষের দাবি, গত প্রায় পাঁচ মাস আগে কলেজে ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাই দীর্ঘদিন ধরেই টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ছাত্র সংসদের ঘর দখলকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছে বলে জানান তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, মোয়াদ শেষের পরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ করে দেননি।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পৃথ্বীরাজ ঝাঁয়ের দাবি, মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও সরকারি নির্দেশ না থাকায় এখনও পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা যায়নি। তিনি জানান, বিদায়ী ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা মাঝেমধ্যে কলেজে আসেন। তাঁদের অনুরোধেই ছাত্র সংসদের ঘর খুলে দেওয়া হয় বলে তাঁর দাবি। তাঁর কথায়, পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ঘটনার তদন্ত করছে। কলেজের তরফে পুলিশের কাছে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ জানানো হচ্ছে। ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদের ঘর সিল করে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রায়গঞ্জ থানার আইসি শান্তনু মিত্রের দাবি, ‘‘তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য ও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy