Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বিনয়ের বার্তা, উঠে গেল বন্‌ধ

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ি আসছেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৩
Share: Save:

নাগরিকপঞ্জি এবং নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ডাকা ২৪ ঘণ্টার পাহাড় বন্‌ধ প্রত্যাহার করে নিল গোর্খা জনমুক্তি যুব মোর্চা। বৃহস্পতিবার সকালে মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং যুব মোর্চার প্রতি আস্থা রেখে যুব নেতাদের বন্‌ধ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। পিনটেল ভিলেজে বসে বিনয় বলেন, ‘‘আমি বরাবর বন্‌ধ, ধর্মঘটশূন্য দার্জিলিঙের কথা বলেছি। আগামী দিনেও তাই পথেই থাকব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখন পর্যটন, আনন্দ, উৎসবের মরসুম চলছে। এনআরসি, সিএএ নিয়ে আন্দোলন চললেও তা মানুষের সমস্যা করে করা যাবে না। দরকারে রাস্তায় নেতানেত্রীদের নেমে মানুষের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ এই ঘোষণার ঘণ্টা চারেকের মধ্যে দার্জিলিঙে বৈঠকে বসেন যুব মোর্চার নেতারা। দুপুরে যুব মোর্চার মুখপাত্র অমৃত ইয়নজন ঘোষণা করেন, দলীয় সভাপতির নির্দেশে পর্যটন এবং উৎসবের মরসুমে বন্‌ধ করা হচ্ছে না। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ি আসছেন। তিনি এখন আন্দোলনের নামে বন্‌ধ, ধর্মঘটের বিরোধী। এই পরিস্থিতিতে দার্জিলিং পাহাড়ে যদি এই ভরা পর্যটন মরসুমে বন্‌ধ হত এবং তার ফলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত, তা হলে দুই দলের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হতে পারে। দলের একটি অংশের দাবি, সেই বিষয়টি বিনয় তামাংকেও জানানো হয়। তাই তিনি উদ্যোগী হয়ে এ দিন তাঁর যুব মোর্চার প্রতি প্রকাশ্যেই বার্তা দেন।

তবে দার্জিলিং জেলার তৃণমূল নেতারা এই বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। বরং মোর্চার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘বন্‌ধ ডাকাটা সম্পূর্ণ অন্য দলের বিষয় ছিল। তবে ওঁরা বন্‌ধ প্রত্যাহার করেছেন বলে শুনেছি। খুব ভাল সিদ্ধান্ত। বড়দিন, নতুন বছর মিলিয়ে পর্যটন মরসুম চলছে। মানুষ আনন্দে তাঁদের দার্জিলিংকে উপভোগ করতে পারবেন।’’ একই ভাবে মোর্চার সিদ্ধান্তকে স্বাগত এবং ধন্যবাদ জানিয়ে বিনয়কে চিঠি পাঠিয়েছে হিমালয়ান হসপিট্যালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক। সংগঠনের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘একদিনের বন্‌ধ হলেও পর্যটকেরা নানাভাবে সমস্যায় পড়তেন।’’

দলীয় সূত্রের খবর, যুব মোর্চার বন্‌ধ নিয়ে দলের অন্দরে নানা মত এবং সংশয় ছিলই। বিশেষ করে, বিনয় বন্‌ধ-বিরোধী হওয়ার পরেই এককভাবে বন্‌ধ ডাকাটা সঠিক হয়নি বলে দলের নেতারা জানান। ভরা পর্যটন মরসুমে বন্‌ধ ডাকলে ফের দার্জিলিং পাহাড় নিয়ে ভুল বার্তা যাবে বলে রাজ্যের বিভিন্ন স্তর থেকেও যুব মোর্চাকে জানানো হয়। এর মধ্যেই পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে গাড়ি, হোটেল মালিকরাও মোর্চা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে বিনয় দলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলোচনা করে নিজেই যুব মোর্চাকে প্রকাশ্যে বার্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

দলের নেতাদের একাংশ জানায়, বিমল গুরুংয়ের আমল থেকে যুব মোর্চার একটা বড় অংশ বরাবর নিজেদের মতে চলা পছন্দ করে। দলের সিদ্ধান্ত মানলেও নিজেদের কর্মসূচি তাঁরা সব সময় ঘোষণা করে এসেছেন। যুব এবং নারী মোর্চা মূল দলের চালিকা শক্তি হওয়ায় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাও এদের আন্দোলনে খুব একটা বাধা দেন না। গুরুং আত্মগোপন করার পর থেকেই যুব মোর্চার অধিকাংশ নেতৃত্ব বিনয় শিবিরে যোগ দিয়েছেন। তাঁরাই এখন সংগঠনটি চালাচ্ছেন।

বিনয় বলেন, ‘‘যুব মোর্চা আমাদের দলের মেরুদণ্ড। যুব মোর্চার সদস্যরা আমার এবং দলের সঙ্গে থাকবেন। গোর্খাদের দাবিদাওয়া পূরণে যুব মোর্চা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা নেবে।’’ তিনি জানান, ‘‘শনিবার যুব মোর্চার ডাকে দার্জিলিং সুপার মার্কেট থেকে কার্শিয়াং অবধি মিছিল হবে। ৫ জানুয়ারি কার্শিয়াং থেকে শিলিগুড়ি অবধি পদযাত্রা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Citizenship Amendment Act CAA NRC Binay Tamang
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy