বিনতারার ময়ূর। নিজস্ব চিত্র।
ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে আদিবাসী যুবক তালা মুর্মু দুটি ময়ূরের ডিম নিয়ে এসেছিলেন গ্রামের বাড়িতে। তার পর পোষা মুরগির ডিমের সঙ্গে রেখে দিয়েছিলেন সেই ময়ূরের ডিম দু’টিকে। মুরগি নিজের ডিমের সাথে ময়ূরের ডিমেও তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়।
বাচ্চাগুলো খুব ছোট ছিল তখন মুরগির বাচ্চার সঙ্গেই ঘুরে বেড়াত। প্রথমে গ্রামের লোক কিছুই বুঝতে পারেননি। কিন্তু তারা বড় হতেই গ্রাম এবং আশপাশের এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ে। গাজোলের ১৪ কিলোমিটার দূরে পুরাতন মালদহ ব্লকের বিনতারা পরিচিত হয়ে ওঠে ‘ময়ূরের গ্রাম’ নামে।
প্রথমে তালার বাড়ির আশপাশেই ময়ূর দুটি থাকত। কিন্তু পরে তারা বাড়ি ছেড়ে গ্রামের ঝোপঝাড় জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকে। ছ’মাস বয়সে একটি ময়ূর মারা যায়। একটি এখনও রয়েছে। তালার বাড়ির কাছে একটি গাছের মগডালে তার রাতের আশ্রয়।
তালা জানিয়েছেন, চাষের ক্ষেতের পোকামাকড়ের পাশাপাশি গ্রামবাসীদের দেওয়া খাবারও খায় ময়ূরটি। বর্ষাকালে সকাল এবং বিকেলে মেঘ উঠলে পেখম মেলে নাচতে দেখা যায় তাকে। তবে প্রতিবছর বর্ষার সময় তার পেখমের পালক ঝরে যায়। আবার নতুন করে গজাতে শুরু করে। কিছু দিনের মধ্যেই সেগুলো বড় হয়ে যায়।
বর্তমানে গ্রামের প্রতিটি মানুষ বুক দিয়ে আগলে রেখেছি এই ময়ূরটিকে। গ্রামের খুদেরা নিয়মিত দানাশস্য খেতে দেয়, ময়ূরকে। ময়ূরের সঙ্গে সময় কাটায় তারা। সাধারণত মালদহ জেলায় ময়ূর দেখা যায় না। প্রত্যন্ত গ্রামের এক যুবকের সৌজন্যে এ বার ময়ূর এসেছে মালদহে।
পুরাতন মালদহ ব্লকের এক অখ্যাত গ্রাম বিনতারা। নারায়ণপুর থেকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা ধরে ১৯ কিলোমিটার আসলে পড়বে এই গ্রাম। গাজোল থেকে দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এই গ্রামে আসলেই দেখা মিলবে এক পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ময়ূরের। এমনি সময় লোকালয় বা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালেও বর্ষাকালে সকাল এবং বিকেলে পেখম মেলে নাচতে দেখা যায় এই ময়ূরকে। গ্রামের প্রায় প্রতিটি মানুষই এই দৃশ্য দেখেছেন। সকলেই খুব ভালোবাসেন এই ময়ূরকে। আর সেই সৌজন্যে বিনতারার নাম হয়ে গিয়েছে ‘ময়ূরের গ্রাম’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy