প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিং পাহাড়ের চা বাগিচায় ২০ শতাংশ বোনাস চুক্তির পাঁচ দিনে মাথায় একাধিক বাগানে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, মোট সাতটি বাগানে গত দু’দিনে মালিকপক্ষগুলির তরফে শ্রমিক অসন্তোষের দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সে কথা জানিয়ে কার্শিয়াঙের অম্বুটিয়া চা বাগান কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়ে বাগান ছেড়েছেন। নোটিসে বলা হয়েছে, ‘শ্রমিকদের টানা আন্দোলনের জেরে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চা পাতা বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় বাগান চালানো সম্ভব হয়।’ জেলা প্রশাসন থেকে শ্রম দফতরে বাগান কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বাগান বন্ধ থাকা অবস্থায় কোনও শ্রমিককে ভবিষ্যতে মজুরি দেওয়া হবে না বলে অম্বুটিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন।
বাগান বন্ধ না করলেও দার্জিলিঙের পান্ডাম চা বাগান কর্তৃপক্ষও প্রশাসনের কাছে একই ধরনের নোটিস পাঠিয়েছেন। তাতে টানা গেট মিটিং, বন্ধের মতো শ্রমিক আন্দোলনের কথা জানিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ বলেছেন, এর ফলে লোকসানের প্রবল আশঙ্কা। গত সোমবার কর্তৃপক্ষের বাগানের বাইরে চলে যাওয়ায় মজুরি, বোনাসের সমস্যা তৈরি হয়েছিল, কালিম্পঙের রংলি রংলিওট বাগানেও। এ ছাড়াও দার্জিলিঙের থরবু, মুন্ডা, পুবং, সিয়ক বাগানেও একই অচলাবস্থা। শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, ‘‘গত ১১ অক্টোবর কলকাতার বৈঠকে ২০ শতাংশ বোনাস চুক্তি হলেও একাংশ বাগান মালিকপক্ষ তা মানতে পারছেন না। মুখে না বললেও শ্রমিকদের পাওনা বোনাসের টাকা না দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।’’
অম্বুটিয়া-সহ বাগানের এই পরিস্থিতি নিয়ে শ্রম দফতরকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েদার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি বলেন, ‘‘বাগানের পরিস্থিতিও দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’’ আজ, বুধবার অম্বুটিয়ার শ্রমিক সংগঠনগুলিকে বৈঠকে ডেকেছেন সহকারি শ্রম আধিকারিক উদেন লেপচা। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিক সংগঠনগুলি বক্তব্য শোনার পর দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হবে।’’
বিনয় তামাং এ দিন বলেন, ‘‘সবাই একজোট হয়ে লড়াই করে আমরা এই জায়গায় পৌঁছেছি। এখন ঐক্য ভাঙার চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাদের এক থাকতে হবে।’’
পাহাড়ের নেতাদের একটি বড় অংশের আশঙ্কা, ‘‘মালিকপক্ষের একাংশ ১৫-১৮ শতাংশ বোনাসের বেশি দিতে রাজি ছিল না। কিন্তু কলকাতার বৈঠকে তাদের চুক্তি মানতে হয়েছে। এখন বেশি পরিমাণে নগদ টাকা জোগাড় করে তা বিলি করার জন্য তাঁরা সময় জোগাড় করার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ বাগানের পরিস্থিতি সামনে এনে এই সময়টা বাগান বন্ধ করেই রাখতে চাইছেন।’’ এর ফলেই নতুন করে সঙ্কট দেখা দিয়েছে, মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy