খুকলুং মেলাবন্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে পৌঁছল বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় স্তরে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট তৈরির পরে, আজ, মঙ্গলবার রাজ্যে প্রথম বড় ভোট হতে চলেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সাগরদিঘিতে উপনির্বাচনের সময়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের চিহ্ন ছিল না। সাগরদিঘি ভোটে তৃণমূলকে হারিয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। এমন পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি বিধানসভার ভোট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের হাওয়া তুলে দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রচার-সভায় বাম-কংগ্রেসকে আক্রমণ করে একটি শব্দও বলেননি। তাঁর আক্রমণের নিশানায় ছিল শুধু বিজেপি। তা নিয়ে বাম-কংগ্রেস শিবির ‘বিব্রত’। তবে বিজেপি ও তৃণমূলের ভোট নিজেদের বাক্সে আনতে সাংগঠনিক ভাবে ঝাঁপিয়েছে বামেরা।
প্রচারের শেষ দিনে সুজন চক্রবর্তী এবং মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে এলাকায় এনেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতারা। ভোটের দিন বুথে-বুথে বাছাই করা কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, “যে যা-ই বলুক, তৃণমূল এবং বিজেপি-বিরোধী ভোট আমরাই পাব।”
এ দিকে, ভোটের আগের দিন ধূপগুড়িতে সন্ত্রাসের আশঙ্কা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার কাঁথিতে তিনি বলেন, “কয়েক জন গুন্ডাকে পাঠানো হয়েছে অশান্তি করার জন্য। কিন্তু আগামী কাল সকাল থেকে ৭৫ শতাংশ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবেন। একতরফা কিছু করতে পারবে না। সে রকম হলে প্রতিরোধ হবে।’’
‘ইন্ডিয়া’ জোটের পর পর বৈঠক এবং ধূপগুড়িতে এসে অভিষেকের ‘বার্তার’ পরে, বাম-কংগ্রেস মনোভাবাপন্ন, অথচ, বিজেপির কট্টর-বিরোধী কিছু ভোট নিজেদের বাক্সে পাওয়ার আশায় রয়েছে তৃণমূলও। তবে, উল্টো অঙ্কও আশঙ্কায় রাখছে তাদের। জোট মেনে নিতে না পেরে, বাম-কংগ্রেসের হাতে থাকা কিছু ভোট তৃণমূলের ‘ছুঁৎমার্গে’ বিজেপির বাক্সে চলে গেলে, অঙ্ক উল্টে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে শাসক দলের একাংশের। ধূপগুড়ির ভোটে তৃণমূলের ভরসা বলতে গত পঞ্চায়েতে তাদের বাক্সে আসা চা বলয়ের ভোট। জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “শহর, গ্রাম এবং চা বলয়ে আমরা বাড়ি-বাড়ি পৌঁছেছি। সকলে উৎসবের মেজাজে ভোট দেবেন। আমরা সহযোগিতা করব।”
গত লোকসভা ভোটের পর থেকে জলপাইগুড়ি জেলায় শুধু ভোট ক্ষয়ই দেখেছে বিজেপি। প্রথমে পুরসভা এবং তার পরে, গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট কমেছে গেরুয়া শিবিরের। লোকসভা ভোটের আগে, নিজেদের হাতে থাকা ধূপগুড়ি আসনও হেরে গেলে, আরও কয়েক পা পিছিয়ে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা বিজেপি কর্মীদের একাংশের। ধূপগুড়ি আসন হারালে জেলায় বিজেপি-বিরোধী জোটের পালে হাওয়া লাগবে বলেও আশঙ্কা বিজেপির জেলা নেতাদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, ধূপগুড়ি আসন বিজেপির হাতছাড়া হলে তা জাতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সাফল্য বলে প্রচার করা হবে।
এই পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তে প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়কে দলে নিয়ে তৃণমূলকে ধাক্কা দেওয়ারও চেষ্টা করেছে বিজেপি। শহর এলাকায় তৃণমূল-বিরোধী ক্ষোভেও আশা দেখছে বিজেপি। যদিও সূত্রের দাবি, বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকা ভোট বুথ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা তাদের রয়েছে কি না, তা নিয়ে দলে দ্বিমত রয়েছে।
বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর কথায়, “তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেস নেতারা এক সঙ্গে হাত ধরে বিজেপিকে হারাতে চাইছেন। কিন্তু মানুষ দুর্নীতি আর চুরির বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy