Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
siliguri municipality

বিজেপি নেতা গ্রেফতার, দফায় দফায় চাপান-উতোর

ওয়ার্ড দফতরটি খোলাও হয়। এর পরে, সন্ধ্যায় সেখানে যান জেলার সমতলের তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। রাতে পুলিশ বিকাশকে গ্রেফতার করে।

এই অফিস নিয়েই গোলমাল শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

এই অফিস নিয়েই গোলমাল শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:২৫
Share: Save:

ওয়ার্ড অফিস করা নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তীকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ ওঠে বিজেপি নেতা বিকাশ সরকারের বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিকাশ সরকারকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে, বিচারক জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। তাঁদের দলের নেতাকে অনৈতিক ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সারা রাত শিলিগুড়ি থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, আনন্দময় বর্মণেরা। শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে অবস্থান-বিক্ষোভ। বিধায়কদের অভিযোগ, তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশেই পুলিশ বিকাশকে গ্রেফতার করেছিল।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ঘটনার পরে, মেয়র গৌতম দেব ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। ওয়ার্ড দফতরটি খোলাও হয়। এর পরে, সন্ধ্যায় সেখানে যান জেলার সমতলের তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। রাতে পুলিশ বিকাশকে গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিয়ে চাপা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে তৃণমূল শিবিরেই। দলের কেউ কেউ মনে করছেন, অকারণ খুঁচিয়ে ঘা করা হল। কারণ, বিকাশের পাশে বিকেল অবধি বিজেপি নেতাদের দেখা না গেলেও, গ্রেফতার হতেই দলের নেতারা রাস্তায় নামেন এবং দুই বিধায়ক দীর্ঘ সময় অবস্থানেও বসেন।

এ দিন সমাজমাধ্যমে দু’টি ‘ভিডিয়ো ক্লিপ’ ছড়িয়ে পড়ে (কোনও ভিডিয়োরই সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। একটিতে দেখা যায়, বিতর্কিত অফিসটিতে পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তীকে ‘আপত্তিকর’ ভাষায় আক্রমণ করছেন বিকাশ সরকার। আরেকটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, বিকাশ নিজের স্ত্রীকে দফতরে নিয়ে গিয়ে প্রতুলকে বাইরে বার করে দিতে বলছেন। পরে তাঁকে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে বলেও দেখা যায়। সে প্রেক্ষিতেই তৃণমূলের অন্য অংশের বক্তব্য, প্রবীণ নেতাকে শারীরিক ভাবে ‘হেনস্থা’ করার পরে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না হলে ভুল বার্তা যেত এবং বিজেপি বাড়তি ‘সাহস’ পেত। এই অংশের আরও দাবি, প্রতি বার ‘ঘটনা ঘটিয়ে’ ব্যক্তিগত মুচলেকা দিয়ে সব সামাল দেওয়া যে যায় না, তা ওই বিজেপি নেতার বোঝা দরকার ছিল এবং ওঁর স্ত্রীর ভূমিকাও পুলিশের দেখা দরকার।

বিষয়টি নিয়ে পাপিয়া ঘোষের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। দলের এক জন প্রবীণ নেতাকে হেনস্থা করা হয়েছে। এটা মানা যায় না। তাতে কেউ যদি রাস্তায় নেমে পড়েন, আমাদের কী করার আছে!’’ মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘এই গ্রেফতারের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আইনশৃঙ্খলা পুলিশ দেখবে। বিকাশ যা করেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

গত পুরসভা নির্বাচনের আগে, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিকাশ সে দলের জেলা সভানেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সে সময় তাকে ‘শো-কজ়’ও করা হয়। এর পরেই তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়ান এবং হেরে যান। পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার ওয়ার্ডে ঝামেলার সময় জেলা তৃণমূল সভানেত্রীর নামে তিনি ‘কুকথা’ বলেন বলেও অভিযোগ তৃণমূল নেতাদের। শুক্রবার জামিনের পরে বিকাশ সরকার বলেন, “তৃণমূল নেতাদের নির্দেশে পুলিশ অনৈতিক ভাবে গ্রেফতার করে। প্রতুল চক্রবর্তী চক্রান্ত করে অফিস দখল করেছেন।’’ অভিযোগ মানেননি প্রতুল।

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri municipality BJP Leader TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE