ফাইল চিত্র।
‘জল আর কুথায়? নদীতে মাটিই ব্যাশি।’ গজলডোবা ব্যারেজ ধরে তিস্তাপাড় দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে যত এগোনো যাবে, কথ্য ভাষার গঠন বদলাতে থাকে। কোথাও শুদ্ধ রাজবংশী ভাষা। কোথাও রাজবংশীর সঙ্গে পূর্ববঙ্গীয় বাংলা মিশে অন্য এক কথ্য ভাষা, কোথাও গোপালগঞ্জের ভাষার টান রয়েছে কথায়, অসমের গোয়ালপাড়ার কথ্য ভাষার প্রভাবও রয়েছে কিছু এলাকায়। ভাষা বদলালেও প্রশ্ন কিন্তু একই— ‘জল আর কুথায়?’
বর্ষা ফিরে যাওয়ার পর থেকে বাসিন্দারা দেখতে পান নদীতে ‘মাটিই ব্যাশি’। নদীখাত জুড়ে চড় পড়েছে। আর বাসিন্দাদের আশঙ্কায় রেখেছে আজ শনিবার বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদী-শেখ হাসিনার বৈঠক। বৈঠকে তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গ উঠতে পারে বলে খবর। গজলডোবা ব্যারাজ থেকে জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, শিলিগুড়ির বেশ কিছু এলাকায় সেচের জল দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, সুখার সময়ে তিস্তার জল দিলে ব্যারাজের গেট খুলতে হবে। তখন সেচ খালে জল মিলবে না। বোরো চাষ এসে দাঁড়াবে প্রশ্নের মুখে, মনে করছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকরাও।
তিস্তা চুক্তি হয়েছিল সত্তরের দশকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, তারপরে তিস্তায় জল ক্রমশই কমেছে। সিকিমে একের পর এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, পানীয় জলের একাধিক প্রকল্প গড়ে উঠেছে। তার জেরে জলের পরিমাণ ক্রমশ কমেছে। সে রিপোর্ট রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের জল আয়োগ দফতরের সমীক্ষাতেও। অসমর্থিত সূত্রের খবর, জল আয়োগ দফতরের হিসেবে প্রায় ৪৮ শতাংশ জল কমেছে তিস্তায়। যদিও আর্ন্তজাতিক বিষয় বলে জল আয়োগের কোনও কর্তাই মন্তব্য করতে চাননি। নদী বিশেষজ্ঞদের দাবি, চুক্তি মেনে জল বণ্টন করার আগে আরেকবার দু’দেশের যৌথ সমীক্ষা হোক। বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চের কর্তা জাতিস্মর ভারতীর কথায়, “আর্ন্তজাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে উজান বা ভাটি কোনও দেশেরই অধিকার যেন খর্ব না হয়, তা দেখতে হয়। শুধু রাজনৈতিক কারণে তিস্তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে দু’দেশেরই ক্ষতি।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না, যাতে উত্তরবঙ্গের কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হয়।” জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “আমরা কৃষকদের খেত থেকে জল কেড়ে নিতে দেব না।”
অন্য দিকে, রেল সূত্রের খবর, দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি লাইনে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে। তবে ট্রেন এখনই চলছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy