Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Humanity

লিঙ্গ পরিবর্তনে নতুন পরিচয়, স্বপ্ন দেখেন সিট

অস্ত্রোপচারে লিঙ্গ পরিবর্তন করে নতুন পরিচয় পেলেন মালদহের গাজলের সৌমিতা ঠাকুর। 

সপরিবার: বাবা, মায়ের সঙ্গে সিট। গাজলে। নিজস্ব চিত্র

সপরিবার: বাবা, মায়ের সঙ্গে সিট। গাজলে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
গাজল শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:০০
Share: Save:

সৌমিতা থেকে তিনি হলেন সিট।

অস্ত্রোপচারে লিঙ্গ পরিবর্তন করে নতুন পরিচয় পেলেন মালদহের গাজলের সৌমিতা ঠাকুর।

এ ভাবে ছেলে পেয়ে খুশি গাজলের কচুয়াটোলার ঠাকুর দম্পতি। তাঁদের দাবি, সৌমিতার চালচলন ছোটবেলা থেকেই ছিল ছেলেদের মতো। এমন আচরণে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হত তাঁকে। সৌমিতার এই লড়াইয়ে পাশে থেকেছেন সঞ্জীবন ঠাকুর ও প্রতিমা।

আর সিট জানিয়েছেন, এ বার তাঁর মতোই সমস্যার মুখে থাকা ছেলেমেয়েদের পাশে থাকতে চান তিনি। বছর চব্বিশের সিটের বাবা সঞ্জীবন জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

তাঁর পরিবারের দাবি, ছোট থেকেই তিনি ছেলেদের পোশাক পরতেই বেশি স্বচ্ছন্দ ছিলেন। ছেলেদের মতোই ছিল তাঁর চলাফেরা। স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন সিট। তার পরে ভর্তি হন গাজলের শ্যামসুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে ভর্তি হন দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে এক কারিগরী কলেজে।

সৌমিতা ওরফে সিট জানান, প্রাথমিক স্কুলে সমস্যা না হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে মেয়েদের স্কুলে পড়তে গিয়ে অনেক কথার মুখে পড়তে হত। সৌমিতা ওরফে সিট বলেন, ‘‘সহপাঠীদের কাছে অনেক সময় কটু কথা শুনতে হয়েছে। রাস্তাতেও অনেকে আমাকে অন্য ভাবে দেখত। তখন স্কুলে পড়াশোনা করা চ্যালেঞ্জের মতো হয়ে উঠেছিল।’’ তবে শুধু স্কুলই নয়, কলেজেও একই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সিট বলেন, ‘‘সোশ্যাল মাধ্যমে

লিঙ্গ রূপান্তরের কথা জেনেছিলাম। তার পরে বাড়িতে তা জানাই।

প্রথমে আপত্তি করলেও পরে বাবা-মা সায় দেয়।”

তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২২ ডিসেম্বর কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি নার্সিংহোমে সৌমিতার অস্ত্রোপচার করা হয়।

টানা সাড়ে পাঁচ ঘন্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। ডিসেম্বর মাসের শেষে বাড়ি ফেরেন তিনি।

তাঁর মা প্রতিমা বলেন, “ছোট থেকেই মেয়ে ছেলেদের পোশাক পরে ঘুরে বেড়াত। ওর বন্ধুও ছিল ছেলেরা। মেয়েদের পোশাক পরতে চাইত না। স্কুলে কোনও রকমে মেয়েদের

পোশাক পরে যেত। তবে ও এ ভাবে লিঙ্গ পরিবর্তন করবে, তা কখনও ভাবতে পারেনি।”

ছেলের জন্য ভোটার ও আধার কার্ডে নাম বদলে এখন ব্যস্ত সঞ্জীবন। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের মাধ্যমে নাম পরিবর্তনের আবেদন জানানো হয়েছে।”

সিটের স্বপ্ন সফল আলোকচিত্রী হওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘এখনও অনেকে লিঙ্গ পরিবর্তন করতে

চান। কিন্তু অনেক বাধার মুখে পড়ে তা করতে পারেন না। আমি তাঁদের

পাশে থাকব।’’

শ্যামসুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিনা দাসমুন্সি বলেন, ‘‘আমি চাই ও সুস্থ থাকুক। আর নিজের স্বপ্নপূরণ করুক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Humanity Sex Change
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy