শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। —ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি থেকে ধূপগুড়ির দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমটার। এই দূরত্বের চার ভাগের তিন ভাগ নাকি শিলিগুড়ির মেয়র তথা দলের নেতা গৌতম দেব ধূপগুড়িতে প্রচারেই হেঁটে ফেলেছেন, এমনই চর্চা চলছিল তৃণমূলের অন্দরে। শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভিতরে থাকা নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণনাকেন্দ্র থেকে দূরে বসে ছিলেন গৌতম। সকাল ৮টার আগেই গণনাকেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছিলেন। টিফিনের প্যাকেট এগিয়ে দেন এক নেতা। তখন খবর এসেছে, বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে। প্যাকেট নিয়ে গৌতম পাশের চেয়ারে তা রেখে দিতে, এক অনুগামীর মন্তব্য, "দাদা টেনশনে আছেন।" তিন রাউন্ডের পর থেকে এগিয়ে যাওয়ার ব্যবধান বাড়তে থাকে তৃণমূলের। এক অনুগামীর দেওয়া মিষ্টি-নোনতা লজেন্স মুখে পোরেন গৌতম দেব। ঠোঁটে ফোটে হাসি।
ধূপগুড়ি পুরসভার ষোলোটি ওয়ার্ডের মধ্যে তেরোটিতে পদযাত্রা করে টানা বারো দিন ধরে প্রচার চালিয়েছেন তিনি। প্রতিদিনই গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ শুনেছেন। কোথাও বাড়ির টাকা পাননি উপভোক্তা, কোথাও রাস্তা ভাঙা, জমা জলের সমস্যার কথা। গৌতম ক্ষোভ শুনে বলেছেন, "ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দেবেন।"
তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোটের অঙ্কে পিছিয়ে থাকা ধূপগুড়ি পুর এলাকার দায়িত্ব গৌতম দেবকে দেওয়ার নেপথ্যে ছিল দলের অন্দরের ‘দ্বন্দ্ব’ থামানোর কৌশল। সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত ভোটের পর্বে শহর তৃণমূলের দুই নেতার ‘হাতাহাতি’ দেখেছিল ধূপগুড়ি। সে কারণে পুর এলাকায় এমন কোনও নেতাকে দায়িত্বে চেয়েছিলে তৃণমূল, যাঁর কথা সকলে শুনবেন। তবে গৌতম দায়িত্ব নেওয়ার পরেও সমস্যা একেবারে কেটেছে, তা নয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশ দাবি করেন, দলের টিকিট না পেয়ে প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন জানলেও তড়িঘড়ি তাঁকে প্রচারে নামানো এবং দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে হাজির করার ব্যবস্থা করেছিলেন কলকাতার কিছু নেতা। ভোটের ঠিক আগে, মিতালী বিজেপিতে চলে যান। তাতে কিছুটা হলেও দলকে ‘বিব্রত’ হতে হয়। সে ঝাপ্টাও পার করে দিয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র। গৌতম অবশ্য সে কথায় গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
ভোটের দিন ধূপগুড়ির পাশে 'ওয়ার রুম' তৈরি করে জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ এবং জেলা চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়কে পাশে বসিয়ে নজরদারি চালিয়েছেন। এ দিনও গণনা চলাকালীন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সব গোষ্ঠীর নেতাদের এক সঙ্গে নিয়ে বসেছিলেন গৌতম। বলেন, "এই জয় সকলের। আমরা মানুষকে বোঝাতে পেরেছি, যে তৃণমূল জিতলেই উন্নয়ন হবে। এ বার সেই উন্নয়নের কাজ শুরু করতে হবে।"
জয় ঘোষণার পরে নেতারা সকলেই বসেছিলেন কখন প্রার্থী জয়ের শংসাপত্র নিয়ে আসবেন৷ ইতিমধ্যে এক কর্মী মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে এলেন। প্যাকেট থেকে মিষ্টি তুলতে যাবেন এমন সময় এক কর্মী কিছুটা চেঁচিয়েই বললেন, "দাদা, মিষ্টি না। খালি পেট…সুগার…।" মেয়রের রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সীমানা ঘেঁষা। মুখে হাসি। গৌতম দেবের উত্তর, "আজকে খেলে কিছু হবে না।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy