সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে অধ্যাপক এবং প্রাক্তনীদের সংঘাতে চাঞ্চল্য শিলিগুড়ি কলেজে। কলকাতার যোগেশচন্দ্র কলেজের মতো অশান্তি ঠেকাতে দিনভর টহল দিল পুলিশবাহিনী। স্বাভাবিক ভাবে এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল।
কলকাতার যোগেশচন্দ্র আইন কলেজ এবং যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের ক্লাস হয় একই ক্যাম্পাসে। আইন কলেজের এক পড়ুয়া তাঁদের কলেজ চত্বরে সরস্বতী পুজো করতে চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কলকাতা হাই কোর্ট যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে সরস্বতী পুজোর অনুমতি দেয়। উচ্চ আদালত জানায়, বহিরাগতেরা যাতে কলেজে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। তার পর পুলিশি প্রহরায় রবিবার পুজো হয়েছে। শিলিগুড়ি কলেজেও খানিক একই রকম ঘটনা। কলেজের একটি সূত্রের খবর, সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে অধ্যাপকদের ‘দেখে নেওয়া হবে’ বলে হুমকি দেন সৌরভ ভাস্কর ওরফে ‘মার্ডার’ নামে এক প্রাক্তনী। সৌরভ দার্জিলিং জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্যতম নেতা। তাঁর হুমকি এবং কলেজে গন্ডগোলের খবর চাউর হতেই শিলিগুড়ি কলেজে দেখা যায় জেলা তৃণমূলের বিভিন্ন নেতাকে। নিরাপত্তার খাতিরে কলেজের ভিতর এবং বাইরে মোতায়েন করা হয় পুলিশবাহিনী।
শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যাপক বিদ্যাবতী আগরওয়াল বলেন, ‘‘বরাবর শিলিগুড়ি কলেজে ডে কলেজ এবং কমার্স কলেজের দুটো পুজো হয়ে এসেছে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে দুটো পুজোর আয়োজন হয়। এ বছর ডে কলেজের পুজো ৭৫তম বছরে পা দিয়েছে। সেই উপলক্ষে পুজোর স্থান পরিবর্তন করে মাঠে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। তখন থেকেই কমার্স কলেজের প্রাক্তন ছাত্র তথা তৃণমূল নেতা সৌরভ এবং ওঁর লোকজন ডে কলেজের পুজোয় বাধাদান করেছেন। ডে কলেজের অধ্যাপকদের বিভিন্ন ভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দুই কলেজের কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। হঠাৎ সোমবার থেকে উচ্চস্বরে গান বাজানো শুরু হয় কমার্স কলেজের পুজোমণ্ডপে। এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে লাউডস্পিকার ঘুরিয়ে দেওয়া হয় ডে কলেজের পুজোপ্যান্ডেলের দিকে। আজ (সোমবার) ডে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের কিছু অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানও বানচাল করতে চাইছেন সৌরভ।’’ শিলিগুড়ি ডে কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষ জানিয়েছেন, এ রকম কোনও অভিযোগ তাঁরা লিখিত আকারে পাননি। তিনি বলেন, ‘‘কমার্স কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’
আরও পড়ুন:
এই বিতর্কে ‘অভিযুক্ত’ নেতা ‘মার্ডার’-এর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে আমার নামে। সব সময় দুটো কলেজে একসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।’’ হুমকির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কে বা কারা এই সব অপপ্রচার করছে, বলতে পারব না।’’ তৃণমূল যুব সভাপতি নির্ণয় রায় জানান, পুরো বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে এই ঘটনা কেউ ঘটিয়ে থাকলে, তা ঠিক হয়নি। পুজোর সময়ে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নেতা সুপ্রকাশ রায় কলেজে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘কলেজে এসেছি। কিন্তু কী হয়েছে, ঠিক জানি না। এ রকম কোনও খবর আমরা পাইনি।’’