নিরুপায়: ধান কেনা হচ্ছে বালুরঘাটের কামারপাড়া হাটে। নিজস্ব চিত্র।
বালুরঘাটের কামারপাড়া হাটে এক মণ (২৮ কেজি) ধান বেচতে এসেছিলেন চক ইসমাইল গ্রামের ছোট চাষি হরেন মাহাতো। রবিবার ধানের দর ছিল মণ প্রতি ৩৬০ টাকা। কুইন্টাল হিসেবে প্রায় ১৩৪০ টাকা। আড়তদারের কাছে মণ প্রতি অন্তত ৪০০ টাকা দাম দেওয়ার জন্য আকুতি করেও লাভ হয়নি। বৃ্দ্ধ চাষি হরেন বাধ্য হলেন কম দামে ধান বেচতে।
হরেনেরই মতো বাবলু পাহান, রবিন মাহাতোদের মতো ছোট চাষিদের কথায়, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও ধার-দেনা মেটাতে নগদ টাকা দরকার। বাধ্য হয়ে ফড়েদের ঠিক করা দামে ধান বেচা ছাড়া উপায় কি! তারাও বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করেন এ দিন।
সরকারি ভাবে ধান কেনার কেন্দ্র কিসানমান্ডিতে সহায়ক মূল্য অনেক বেশি। প্রতি কুইন্টাল ১৮৮৮ টাকা। কেন কিসানমান্ডিতে ধান নিয়ে যাচ্ছেন না? প্রশ্ন শুনে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন চক ইসমাইলের ললিত মাহাতো। বলেন, "কিসানমান্ডিতে নাম নথিভুক্ত করে এসেছি। ওয়েটিং লিস্ট ১৪০০।" মানে ১ হাজার ৩৯৯ জন চাষির পর ললিত তাঁর ফলানো ৬ মণ ধান সহায়ক মূল্যে বিক্রির সুযোগ পাবেন। বলাইবাহুল্য ততদিন ধান নিয়ে ঘরে বসে থাকার মত পরিস্হিতি কিংবা আর্থিক জোর নেই লালিতদের। ফলে দক্ষিণ দিনাজপুরে হাট নির্ভর হয়ে জেলার বড় অংশের চাষিকে ধানের অভাবি বিক্রির মুখে পড়তে হয়েছে। অথচ প্রশাসন থেকে শাসক বা বিরোধী রাজনৈতিক দলের কৃষক সংগঠনগুলির কাউকেই এখনও পাশে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ চাষিদের।
দক্ষিণ দিনাজপুরের অন্যতম বড় ধান বেচাকেনার হাট কামারপাড়া। রবিবার ওই হাটে প্রায় ৩ হাজার টন ধান বেচাকেনা হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান। হাটে ৩০ থেকে ৪০ জন আড়ত ব্যবসায়ীর কাছে চাষিরা ধান বেচেন। সরকারিভাবে জেলা খাদ্য দফতর এ জেলার ৮টি কিসানমান্ডিতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু প্রতিবারের মত এ বারও কেন সাপ্তাহিক ধান-হাটের এলাকায় সরকারি শিবির করে চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক দামে ধান কেনা হচ্ছে না সে প্রশ্ন তুলেছেন চাষিরা। তাদের দাবি, তাহলেই হাটগুলিতে আড়ত ব্যবসায়ীরা একচেটিয়া দাম নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পেতেন না।
এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় এ দিন বলেন, ‘‘কিসানমান্ডিতে ধান কেনার পাশাপাশি এ জেলার পতিরাম, কামারপাড়া, কুমারগঞ্জ ও গঙ্গারামপুরের প্রাণসাগরের হাটে শিবির চালু করে চাষিদের থেকে সরাসরি ধান কেনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy