জমজমাট: ভিড় কোচবিহারের মাছবাজারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
একটু একটু করে ভাঙছিল ধৈর্যের বাঁধ। দু-মাস ধরে ঘরবন্দি থেকে ক্রমশ যেন হাঁপিয়ে উঠছিল বাজারপ্রিয় বাঙালি। তবু নববর্ষে কিছুটা হলেও সংযম দেখা গিয়েছিল। জামাইষষ্ঠীতে এসে যেন পুরো ভাঙন!বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাজারে থিকথিকে ভিড়। মাছ-মাংস ও আনাজ শুধু নয়, ভিড় হয়েছে জামাকাপড়ের দোকানেও। জামাইষষ্ঠীতে কিছুটা হলে যেন স্বস্তির ছাপ দেখা গিয়েছে অনেক দোকানির মুখে। বাংলা নববর্ষে এবার দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। লকডাউনে দুই মাস ধরে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ। দিন কয়েক হল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তারপর থেকে ধীরে ধীরে দোকানপাট খুলতে শুরু করে। এক দোকানি বলেন, “এটুকু না হলে তো না খেয়ে মরে যাব।" অবশ্য সেই ভিড়ে সচেতনতার অভাব স্পষ্ট চোখে পড়েছে। কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকা অনেক মানুষের মুখেই ছিল না মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব ছিল না একেবারেই। কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “নির্দেশ মেনেই কাজ হচ্ছে। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবদিকে নজর রাখা হচ্ছে।”
কোচবিহারের সব থেকে বড় বাজার ভবানীগঞ্জ। সেই বাজারের উপরে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী নির্ভরশীল। এ ছাড়াও গোটা জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রচুর দোকান বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কয়েক লক্ষ মানুষ ব্যবসার উপরে নির্ভরশীল। গত দু’মাস ধরে সেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দোকান মালিকেরা যেমন অসুবিধেয় পড়েন, তেমনই দোকানের কর্মীদের সংসারে টানাটানি শুরু হয়ে যায়। এ ছাড়া অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছে। যারা ছোট বাজারে বা ফুটপাতে ব্যবসা করেও সংসার চালান অনেকে। ভবানীগঞ্জ বাজারের এক বস্ত্র ব্যবসায়ী জানান, তাঁর দোকানে দু-জন কর্মী রয়েছেন। দু-মাস ধরে সেই কর্মীদের তিনি টাকা দিচ্ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিজেই টানাটানি মধ্যে পড়ে যান। ওই ব্যবসায়ী বলেন, “জমানো টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছিল। এমন করে চলা তো কঠিন। আর কর্মীদের তো ফেলে দিতে পারি না। গত দু-দিনের ব্যবসায় উপকার হয়েছে।”
ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দে জানান, তিনি সপ্তাহে ছ-দিন দোকান করতেন। তাতে তাঁর সংসার ঠিকঠাক চলছিল। তিনি বলেন, “জামাইষষ্ঠী কিছুটা রক্ষা করেছে।” কোচবিহার জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম কুন্ডু জানান, দু-মাস ব্যবসা বন্ধ থাকায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “নতুন বছরে কত মানুষ জামাকাপড় কেনেন। এমন উৎসব থেকেই আমাদের প্রধান ব্যবসা হয়। এবারে তা বন্ধ থাকায় পথে বসতে হয়েছে।”
বাসিন্দাদের অনেকে অবশ্য জামাইষষ্ঠীর সঙ্গে নববর্ষেরও জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন। বাসিন্দা প্রদীপ দত্ত বলেন, “নববর্ষে তো কিছু কেনা হয়নি। তাই সবাইকেই কিছু না কিছু নতুন দিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy