মৃত অভিজিৎ সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
মিড ডে মিল খেতে গিয়ে মৃত্যু হল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের। বুধবার এ নিয়ে শোরগোল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমুণ্ডি ব্লকের কচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। শিক্ষকদের মারধর করে স্কুলের সামনে আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ওই স্কুলে যায় পুলিশ। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রের নাম অভিজিৎ সরকার। বুধবার ১২ বছর বয়সি ওই ছাত্র সহপাঠীদের সঙ্গে মিড ডে মিলের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল সে। হঠাৎই অসুস্থবোধ করে ছাত্রটি। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই ছাত্রকে ইটাহার গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিজিৎকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুলপ্রাঙ্গণ। স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের মারধর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু হয়। স্কুলের সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক এবং পড়ুয়ারা। স্কুলে ঢুকে তাণ্ডব চালন গ্রামবাসীরা। শিক্ষকদের পাশাপাশি মারধর করা হয় প্রধানশিক্ষককেও। শিক্ষকদের মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামবাসীর বিক্ষোভের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে পুলিশ। নামাতে হয় র্যাফ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে প্রধানশিক্ষক রানা বসাক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বার বার ফোন করার পরেও যথোপযুক্ত বাহিনী পাঠায়নি স্থানীয় থানা। সরকারি জিনিসপত্র তছনছ করেন ক্ষুব্ধ জনতা। মারধর করা হয় তাঁকে এবং তাঁর সহকর্মীকে। পাশাপাশ, তিনি ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে জানান, প্রাথমিক ভাবে যতটুকু চিকিৎসা করা যায়, তাঁরা সেটা করেছেন। দায়িত্বের সঙ্গে ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন এবং অভিভাবকদের খবর দিয়েছেন। প্রধানশিক্ষকের কথায়, ‘‘দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ খাবারের লাইনে দাঁড়িয়েছিল পড়ুয়ারা। কিছু ক্ষণ পর বাচ্চাটি অসুস্থ হয়। দু’-তিন মিনিটের মধ্যে অভিভাবক এসে পৌঁছে যান। আমরা ছাত্রের মাথায় জল দিই। তার প্রাথমিক চিকিৎসা করি। আমাদের কোনও ভুল ছিল না। কিন্তু তার পরেও যে ভাবে লন্ডভন্ড করা হল স্কুল, তা নিয়ে কথা বলার মতো ভাষা নেই।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘বারংবার ফোন করা সত্ত্বেও যত সংখ্যক পুলিশ দরকার ছিল, আসেনি। পরে র্যাফ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক কী কারণে ছাত্রের মৃত্যু হল, তা ময়নাতদন্তের পর পরিষ্কার হবে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল বলেন, ‘‘গন্ডগোল করার জন্য আমরা তিন-চার জনকে গ্রেফতার করেছি। তাঁরা স্কুলে ভাঙচুর করেছিলেন। পাশাপাশি মৃত ছাত্রের পরিবার কোনও অভিযোগ জানালে তা খতিয়ে দেখা হবে। মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy