মালদহ মেডিক্যালের ওপিডির সামনে। নিজস্ব চিত্র।
দেড় বছরের শিশুটির হাড় জিরজিরে শীর্ণকায় চেহারায় অপুষ্টির ছাপ স্পষ্ট। এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিল সে। একরত্তি সেই মেয়েকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রিকশাচালক বাবা মনোজ শর্মা। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবার দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। মনোজ বলেন, ‘‘শিশুরা কেমন রয়েছে, তাঁর খোঁজখবরও নিচ্ছেন না অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। জ্বর সারছে না।’’ শিলিগুড়ি পোকাইজোতের বিসিন্দা মনোজ জানান, দুই মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে চার জনের সংসার চলে রিকশা চালিয়ে। বর্তমানে ভাড়া কমে গিয়েছে। তাই সংসারে দু’বেলা খাবার জোটাতেই তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। মেয়েদের দুধ, ফল সপ্তাহে এক-আধ দিনও খাওয়াতে পাচ্ছেন না।
এর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, অপুষ্টিতে ভোগার ফলেই কি শিশুদের জ্বরের মতো রোগ বাড়ছে? কমে যাচ্ছে প্রতিরোধ ক্ষমতা?
সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প সূত্রে খবর, লকডাউনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ ছিল। শিশুদের পুষ্টিগুণ মাপাও থমকে প্রায় দেড় বছর। ফলে শিলিগুড়ি, মালদহ তো বটেই, উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রত্যেক জেলায় অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকটাই। ৫ বছর বয়স পর্যন্ত অনেক শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে। উত্তরের বেশিরভাগ জেলায় শিশুদের জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, শরীর দুর্বল হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগে যা চিন্তার।
দার্জিলিং জেলায় অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সরকারের একটি সূত্রের দাবি। ওই সূত্রের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত বাড়িতে গিয়ে পরিসংখ্যান নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফলে অনেক ব্লকেই হলুদ (অপুষ্ট) শিশুর পরিসংখ্যান সঠিক নেই। খবর নিয়ে শুধু লাল (অতি অপুষ্ট) শিশু পরিসংখ্যান তৈরি হয়েছে। মালদহে করোনার সময়ে নতুন করে অপুষ্ট শিশুর পরিসংখ্যান তৈরি হয়নি। সেই সংখ্যা যে অনেকটাই বেশি হবে, তা আন্দাজ করতে পারছেন আধিকারিকরা।
তবে প্রকল্পের আধিকারিক এটাও দাবি করেছেন, কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। অভিভাবকদের পরামর্শ দিচ্ছেন, কী করণীয় তা জানাচ্ছেন। উল্টো দিকে অবশ্য এ-ও দাবি করা হচ্ছে, দুয়ারে সরকারের মতো বিভিন্ন সরকারি কাজে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরও কাজে লাগানোর ফলে কার্যক্ষেত্রে লোক কম পড়েছে। সরকারি সূত্রে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, পরিস্থিতি দ্রুত শোধরাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy