উত্তরকাশী থেকে উত্তরবঙ্গে পৌঁছে মানিক তালুকদার। —নিজস্ব চিত্র।
শেষমেশ নিজের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেই কাজের আশ্বাস মিলল উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থেকে উদ্ধার পাওয়া কোচবিহারের পরিযায়ী শ্রমিক মানিক তালুকদারের। এ রাজ্যেই মানিককে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করলেন পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সামিরুলের সঙ্গে কথা হয় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়ের। মানিক কোন-কোন ক্ষেত্রে কাজে আগ্রহী, তা জেনে একটি আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন পার্থপ্রতিম। পার্থপ্রতিম জানিয়েছেন, তিনি প্রাথমিক ভাবে মোবাইল ফোনে মানিক তালুকদারের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে তিনি কোন কাজে পারদর্শী তার একটি তথ্য সামিরুলকে পাঠিয়েছেন। যদিও মানিক নিজে বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে নির্দিষ্ট ভাবে কেউ কাজের কথা বলেননি। সত্যিই যদি রাজ্যে কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন ভাবব। আপাতত পুরনো কাজে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
এই মুহূর্তে মানিককে নিয়ে তৎপরতা শুরু হলেও, এত দিন কেন তাঁর কাজ নিয়ে সবাই নিশ্চুপ ছিলেন তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সামিরুল বলেছেন, ‘‘মানিক তালুকদারকে উদ্ধার করার পরে, তাঁর যেন কোনও বিষয়ে অসুবিধা না হয়, সে বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছিল জেলা প্রশাসনকে। সে মতো কাজও হয়েছে। তবে কাজের বিষয়টির ক্ষেত্রে কোনও ভাবে যোগাযোগ হয়নি। এ বার আমরা তাঁর একটি কাজের ব্যবস্থা করে দেব। সে মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ পার্থপ্রতিমের কথায়, ‘‘মানিক তালুকদার ওই বেসরকারি সংস্থায় ভাল বেতনের কাজ করেন। সে জন্য তিনি হয়তো ফিরে যেতে আগ্রহী। আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি আগ্রহী থাকলে, এই বিষয়ে আমরাও এগিয়ে যাব।’’ মানিক অবশ্য ফিরে যাওয়ার বিষয়ে প্রায় মনস্থির করে ফেলেছেন। তার পরেও তিনি বলেন, ‘‘আমি তো বরাবর বলেছি, আমার এখানে একটা কাজের ব্যবস্থা হলে আর ঝুঁকির কাজে যোগ দেব না। প্রথম দিকে সবাই আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরে, আর কেউ খোঁজ রাখেননি।’’
গত ১২ নভেম্বর উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কোচবিহারের বলরামপুরের মানিক। টানা সতেরো দিন লড়াইয়ের পরে, উদ্ধার করা হয় ওই শ্রমিকদের। রাজ্য সরকার মানিককে সেখান থেকে বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করে। সে সময়ে মানিক ও তাঁর পরিবার এলাকায় কাজের আবেদন জানান, যাতে তাঁকে আর ফিরতে না হয়। কিন্তু মাস গড়িয়ে গেলেও কোনও কাজের ব্যবস্থা হয়নি। তাই ফের পুরনো কাজে যোগ দিতে ২২ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মানিক। সে বিষয়ে ওই সংস্থার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাকা কথাও হয়েছে, বলেই দাবি তাঁর।
পরিযায়ী উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সামিরুল জানান, তাঁরা একটি ‘ডেটাবেস’ তৈরি করছেন। যেখানে নির্মাণ সংস্থা, জুট ও হাউজি়ং প্রকল্পে কাজের সুযোগ রয়েছে। আগামী কয়েক বছরে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে ওই কাজ হয় এমন বিভিন্ন সংস্থায়। পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম ও ফোন নম্বর নথিভুক্ত করা হচ্ছে। কোথায়-কোথায় কাজের সুযোগ রয়েছে, তাও জানিয়ে প্রত্যেকের মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy