—ফাইল চিত্র
দুঃস্থ পরিবারের লোকেদের তাঁদের পরিজনদের দেহ সৎকারের জন্য ২০১৬ সালে ‘সমব্যথী প্রকল্প’ চালু করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু প্রশাসনিক নানা কারণে এত দিন ওই প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতা পেতে আবেদনকারী বাসিন্দাদের অনেকটাই সময় লেগে যেত। নিজেরাই টাকা খরচ করে মৃতদেহ সৎকারে বাধ্য হতেন। এই সমস্যা সমাধানেই এ বার উদ্যোগী হল রায়গঞ্জ পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, ১২ জানুয়ারি থেকে পুরসভা কর্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন এলাকার শশ্মান ও কবরস্থানে গিয়ে দুঃস্থ পরিবারের লোকেদের হাতে প্রকল্পের দু’হাজার টাকা করে তুলে দিচ্ছেন। এর মধ্যেই পুর কর্তৃপক্ষ শ্মশান ও কবরস্থানে গিয়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দশটিরও বেশি দুঃস্থ পরিবারের লোকেদের হাতে ওই টাকা তুলে দিয়েছেন বলে খবর। বাসিন্দারা জানাচ্ছে, প্রকল্পের কাজে গতি বাড়ায় সুবিধে হচ্ছে তাঁদেরও।
পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাসের কথায়, প্রকল্প বেশ কিছু দিন আগেই চালু হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক নানা কারণে এত দিন দুঃস্থ পরিবারের বাসিন্দাদের আবেদন করার পর ওই প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতা পেতে প্রায় একমাস সময় লেগে যেত। ফলে প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও পরিজনদের দেহ সৎকার করার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হত। যে কারণে মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পটি চালু করেছেন, সেই উদ্দেশ্যই পূরণ হত না। এ বার তাই পুর কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক নিয়ম সরলীকরণ করে শশ্মান ও কবরস্থানে গিয়ে নিজেরাই ওই সব পরিবারের লোকেদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করলেন।
পুরসভা সূত্রে খবর, এতদিন পুর এলাকার দুঃস্থ পরিবারের কোনও সদস্যের স্বাভাবিক মৃত্যু হলে, তাঁদের পরিবারের লোকেরা পুরসভায় গিয়ে ওই প্রকল্পে সৎকারের খরচ পাওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করতেন। পরে পুরসভা কর্তৃপক্ষ আবেদনকারী বাসিন্দাদের এলাকার কাউন্সিলর ও পুরসভার সুপারভাইজ়ারদের পরামর্শ নিয়ে আবেদন অনুমোদন করতেন। আর তারপরও পুরসভা থেকে মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্র না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের পরিবারের লোকেরা ওই প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতা পেতেন না। অনেক ক্ষেত্রে সেই শংসাপত্র পাওয়ার পরও আবেদনকারী বাসিন্দাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকায় তাঁদের ওই প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য পাওয়া আটকে যেত।
পুরসভার তরফে নিযুক্ত ‘সমব্যাথী প্রকল্প’-এর নোডাল পার্সন সুব্রত চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘১২ জানুয়ারি থেকে শহরের কোনও ওয়ার্ডের দুঃস্থ বাসিন্দাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হলে মৃতের এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর ও সুপারভাইজার সঙ্গে সঙ্গে পুরসভাকে বিষয়টি জানাচ্ছেন। এরপর পুরসভার আধিকারিক ও কর্মীরা শ্মশান বা কবরস্থানে গিয়ে মৃতদের পরিবারের লোকেদের কাছ থেকে মৃত্যুর সরকারি নথির প্রতিলিপি নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ওই প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতার আবেদনপত্র গ্রহণ করছেন। এরপরেই পরিবারের হাতে ওই টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy