Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Sexual Harassment

পর পর ধর্ষণ-খুন কেন, ‘চক্রান্ত’ দেখছেন সাংসদ

শুক্রবার জেলায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, আর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ অক্টোবর বছর সাতেকের এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুন এবং পরে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৫:৫৬
Share: Save:

আপাতদৃষ্টিতে ‘শান্ত’ জেলা বলেই পরিচিত। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক টক্কর হয় ঠিকই, কিন্তু খুনখারাপি কিংবা মারপিটের তেমন ঘটনাও সে অর্থে চোখে পড়ে না। সেই আলিপুরদুয়ারেই আচমকা পর পর নাবালিকা ধর্ষণ কিংবা খুনের ঘটনা কেন ঘটছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুরু হয়েছে রাজনৈতিকচাপানউতোর।

শুক্রবার জেলায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, আর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ অক্টোবর বছর সাতেকের এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুন এবং পরে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল।

আগামী ১৩ নভেম্বর জেলায় মাদারিহাট বিধানসভায় উপনির্বাচন। তার আগে এমন ঘটনায় ‘চক্রান্তের’ সম্ভাবনা দেখছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই জেলায় বিজেপি অত্যন্ত শক্তিশালী। লোকসভা বা বিধানসভায় আমাদের প্রার্থীরাই জয়ী হন। এই অবস্থায় জেলায় পর পর এমন ঘটনা একটা চক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সদস্য প্রকাশ চিক বরাইক পাল্টা বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা রুখতে রাজ্য সরকার ও পুলিশ-প্রশাসন সর্বদা সচেষ্ট। রাজ্যের যে প্রান্তেই এমন ঘটনা ঘটুক না কেন, তার বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিজেপির অভিযোগ হাস্যকর।’’

শুক্রবার আলিপুরদুয়ার জেলায় ধর্ষণের দু’টি অভিযোগ উঠেছে। যার মধ্যে সাড়ে ছ’বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। যে ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে মারে জনতা।শনিবার ভোট-প্রচারে এসে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী সন্ধ্যায় সেই মেয়েটির বাড়িতে যান। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীই (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দায়ী। কারণ, তিনি পুলিশমন্ত্রীও। তিনি পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গলরাজ চালাচ্ছেন।’’ তার আগে জলপাইগুড়ির গয়েরকাটায় শুভেন্দু বলেন, “পুলিশ এবং সরকারের উপরে জনতা যখন আস্থা হারিয়ে ফেলে, তখন আইন নিজের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়।” গণপিটুনিতে অভিযুক্তকে যারা পিটিয়ে মেরেছে, তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান বিরোধী দলনেতা। ঘটনাচক্রে, প্রায় একই সুরে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও বলেছেন, ‘‘ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেই পারেন। এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। বরং, যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁরা যাতে কোনও আইনি জটিলতায় না পড়েন।”

প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্রসৌম্য আইচ রায় অবশ্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা এবং বিরোধী দলনেতা প্রচ্ছন্ন ভাবে এই গণপিটুনিকে সমর্থন করেছেন। আমরা মনেকরি, এটা চলতে থাকলে বাংলায় আরও নৈরাজ্য তৈরি হবে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘রাজ্য জুড়ে সবাই মনে করছে, যা খুশি করতে পারি। প্রশাসন নেই এবং প্রশাসন কিছু করবে না।”

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর দাবি, ‘‘নাবালিকাদের উপর এ ধরনের অত্যাচার রুখতে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া জরুরি। রাজ্যের তরফে এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশও পাঠানো হয়েছে। তাই বিজেপির নেতা-জনপ্রতিনিধিদের উচিত, নাটক না করে রাজ্যের সুপারিশগুলো যাতে বাস্তবায়িত হয়, সে ব্যাপারে কেন্দ্রে তাদের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE