দেবী ভাণ্ডানীর পুজো শুরু ডুয়ার্সে। নিজস্ব চিত্র।
বিসর্জন হতেই ফের বোধন মা দুর্গার। তবে দেবী এখনে ভাণ্ডানী বা বনদুর্গা নামে পূজিত হন। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের নানা এলাকায় শনিবার, একাদশীর দিন শুরু হয়েছে এক দিনের সেই ‘দুর্গাপুজো’। মূলত উত্তরবঙ্গের রাজবংশী প্রধান গ্রামগুলিতে ভাণ্ডানী রূপে পূজিত হয়ে থাকেন দেবী উমা। পুজো উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে মেলাও বসে।
একদশীর সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের রাজবংশীপ্রধান গ্রামগুলিতে শুরু হয়েছে মা ভাণ্ডানী রূপে দেবী সর্বমঙ্গলার আরাধনা। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার, সেইসঙ্গে নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলা এবং পার্শ্ববর্তী কোচবিহার জেলার বেশ কিছু গ্রামে সমৃদ্ধির দেবী ভাণ্ডানীর পুজো ঘিরে উৎসবের আমেজ। ধূপগুড়ি পুরসভার হাসপাতাল পাড়া , গধেরকুঠি এলাকায় মেলা বসে ভাণ্ডানী পুজা কেন্দ্র করে । ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভাণ্ডারি গ্রামে পুজো হয় মেলাও বসে ।
শুধুমাত্র রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষই নয়, ভাণ্ডানী পুজো ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামীণ উত্তরবঙ্গের সমস্ত ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ। দেবী দুর্গারই এক রূপ দেবী ভাণ্ডানীকে আবার উত্তরবঙ্গের বনবস্তিবাসীরা পুজো করেন ‘বনদুর্গা’ রূপে। উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলেও তাই দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর এক উৎসবের শেষে আর এক উৎসব শুরু হয়ে যায়।
দেবী ভাণ্ডানী র পুজো ঘিরে রাজবংশী সমাজে লোককথা প্রচলিত রয়েছে। কথিত যে, বিসর্জনের পর বাপের বাড়ি থেকে নিজের ঘর কৈলাসে ফেরার সময় উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল দিয়েই গ্রাম্য বধূ বেশে ফিরছিলেন উমা। কিন্তু সেই সময় রাতের অন্ধকারে অরণ্যের গভীরে মায়ার ছলে মা পথ হারিয়ে ফেলেন। জঙ্গল থেকে ভেসে-আসা কান্নার শব্দ শুনে ছুটে যান রাজবংশী সমাজেরই কিছু বাসিন্দা। তাঁকে নিয়ে যান নিজেদের গ্রামে।
একটি রাত দেবী সেই গ্রামে কাটিয়ে একাদশীর দিন ফিরে যান কৈলাসে। গ্রামবাসীদের আতিথ্যে তুষ্ট দেবী ফিরে যাওয়ার আগে নিজের প্রকৃত পরিচয় দেন এবং ডুয়ার্সের গ্রামাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার সর্বদা পূর্ণ থাকার বর দিয়ে যান। সেই থেকেই দেবী ভাণ্ডানী তথা বনদুর্গার পুজোর সূচনা।
ঝালটিয়া এলাকার ভাণ্ডানী পুজোর উদ্যোক্তা খোকা অধিকারী বলেন, ‘‘আমাদের ভাণ্ডানী পুজো ৮০ বছরের বেশি সময় ধরে হচ্ছে। ডুয়ার্সের কোথাও বনদুর্গা কোথাও আবার অন্নপূর্ণা দেবী হিসেবে পূজিত হয়ে থাকেন দেবী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy