শিলিগুড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি পিএসির সদস্যেরা। — নিজস্ব চিত্র।
লোকসভার স্পিকারের নির্দেশে দু’দিনের সফরে শিলিগুড়ি এসেছে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)। কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক উন্নয়নমূলক এবং পরিষেবামূলক প্রকল্পের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখেন কমিটির সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলে পরিস্থিতি আঁচ করারও চেষ্টা করা হয়। গণবণ্টন বা রেশন, মিড ডে মিল এবং উত্তরের চা বাগান এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে পিএসি। যদিও বৈঠকের তাল কেটেছে শেষ লগ্নে। কমিটির চেয়ারম্যান বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে উষ্মাপ্রকাশ করে সাংবাদিক সম্মেলন বয়কট করেন কমিটির সদস্য দুই বিজেপি সাংসদ।
নিয়ম হল, কোনও বিষয়ে পিএসি আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলার আগে সে বিষয়ে লিখিত রিপোর্ট যায় লোকসভার স্পিকারের কাছে। অভিযোগ, শিলিগু়ড়িতে সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়েছেন চেয়ারম্যান অধীর। তারই প্রতিবাদে সাংবাদিক বৈঠক বয়কট করেন বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পাল এবং রামকৃপাল যাদব। জানা গিয়েছে, দু’দিনের সফরে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার পর একটি রিপোর্ট তৈরি করে পিএসি। সেই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা স্পিকারের টেবিলে। কিন্তু দুই বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, নিয়মমাফিক কমিটির রিপোর্ট স্পিকারের কাছে জমা পড়ার আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে তা প্রকাশ্যে এনে ফেলেছেন চেয়ারম্যান অধীর। তারই প্রতিবাদে বয়কট দুই বিজেপি সাংসদের।
সাংসদ জগদম্বিকার অভিযোগ, স্পিকারের কাছে রিপোর্ট জমা পড়ার আগেই সাংবাদিকদের তা জানিয়ে দিয়ে অনিয়মে উৎসাহ দিয়েছেন অধীর। তিনি বলেন, ‘‘স্পিকারের নির্দেশে ভারত সরকারের উড়ান, রেশন এবং চা বাগানে বেশ কিছু প্রকল্পের অনিয়মের যে রিপোর্ট এসেছে তার পুনরায় তদন্তের জন্য পাবলিক একাউন্ট কমিটিকে এখানে পাঠানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কমিটির তদন্ত শেষ হলে তদন্তের রিপোর্ট স্পিকারের কাছে জমা দিতে হয়। কিন্তু তিনি সেটা না করে, আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে অনিয়ম করেছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। স্পিকারকেও বিষয়টি জানাব।’’ অন্য বিজেপি সাংসদ রামকৃপাল বলেন, ‘‘এটা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক না। এটা সংসদ তথা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সর্বপ্রথম স্পিকারের কাছে এই রিপোর্ট যাওয়া উচিত। এত প্রবীণ একজন নেতা হয়ে এই কাজ তিনি কেন করলেন, সেটাই বড় বিষয়। এটা সংসদের বহু পুরনো কমিটি। তার গরিমা রয়েছে। তা এখানে নষ্ট হচ্ছে।’’
তবে, রেশন ব্যবস্থা থেকে মিড ডে মিল, চা বাগানের সমস্যা— শেষ লগ্নে তাল কাটলেও বৈঠকে আগাগোড়াই রাজ্যের দিকে আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন অধীর। তিনি বলেন , ‘‘খাদ্যবণ্টন নিয়ে আমরা স্পিকারকে যেমন জানাব, তেমনই রাজ্যের কাছেও আমরা কৈফিয়ৎ চাইব। আমার সঙ্গে কমিটির অন্যান্য সদস্যদেরও একই মত। ভুয়ো রেশন কার্ড কি করে হয়? খোদ দফতরের মন্ত্রীই জেলে তা হলে সাধারণ মানুষের কাছে কী বার্তা যাবে?’’ এর পাশাপাশি অধীর মালদা, বালুরঘাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিমানবন্দর চালু করা রিপোর্ট দেবেন বলে জানিয়েছেন। চা বাগানের সমস্যা নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেন চেয়ারম্যান অধীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy