—প্রতীকী চিত্র।
আগাম খবরও নেই পুরসভার কাছে। অথচ, মঙ্গলবার বেলা ৯টার পর থেকে নির্জলা হয়ে রইল পুরো শিলিগুড়ি শহর। বিকেলেও জল সরবরাহ হয়নি কোথাও। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের দাবি, তিস্তা মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালের জলে প্রচুর পলি আসতে শুরু করায় ঘোলা জল সরবরাহ করা বা ‘ইনটেক ওয়েল’ থেকে জল তোলা সম্ভব হয়নি। মহানন্দা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ জানান, কালিঝোরা ড্যাম থেকে বেশি জল ছেড়ে দেওয়ায় পলি বাড়তে শুরু করে। অথচ, পুর কর্তৃপক্ষের কাছে সে খবর ছিল না। তাই আগাম বিষয়টি জানাতেও পারেননি তাঁরা। শেষে এ দিন দুপুরের পরে, পুরপ্রতিনিধিদের মোবাইলে জল সরবরাহ বিভাগের তরফে মেসেজ পাঠিয়ে জানানো হয়, জলে পলি আসছে, সে কারণে জল তোলা সম্ভব হচ্ছে না। বিকেলে পানীয় জল সরবরাহ সামান্য ব্যাহত হতে পারে। এ দিন বিকেলে কোনও ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
জল সরবরাহ বিভাগের তরফে এ দিন সকালে অনেক ওয়ার্ডে অর্ধেক সময় জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। তারা জানায়, জলে পলি আসছে দেখে, বেলা ৯টা থেকে পাম্প চালানো বন্ধ রাখা হয়। কোথাও বেলা সাড়ে ৮টা, কোথাও ৯টার পরে জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। শীতে জলের চাহিদা কম হলেও, অনেকেই রান্না বা বাড়ির প্রয়োজনীয় কাজের জন্য পুরসভার এই জলের উপরেই ভরসা করেন। ফলে, বিপাকে পড়েন তাঁরা। বিশেষ করে, যে সমস্ত ওয়ার্ডে সকালে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জল সরবরাহ হওয়ার কথা। কিছু ওয়ার্ডে ভোর ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত জল সরবরাহ হয়। সকালে জল এলেও বিকেলে কেউ পাননি।
সকালে জল সরবরাহ বিপর্যস্ত হওয়ার পর পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত এবং দফতরের বাস্তুকারেরা ফুলবাড়ি ব্যারাজ এলাকায় যান। সেখানে সেচ দফতরের বাস্তুকারদের সঙ্গে কথা বলেন। দুলাল বলেন, ‘‘জলের সঙ্গে পলি আসছে। জানা গিয়েছে, সিকিমে হড়পা বানের সময় প্রচুর পলি এসেছিল। তাই জল তোলা যায়নি। সমস্যা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, তিস্তার উজানে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ বেশি জল ছাড়তেই সেই সব পলি জলের সঙ্গে ভেসে আসছে। ফুলবাড়ি ব্যারাজ কর্তৃপক্ষও ঘোলা জল বার করতে জল ছেড়েছে। তাতে ‘ইনটেক ওয়েল’-এ জলস্তর নেমে গিয়েছে। পলি আসছে। তাই জল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে ফুলবাড়ি ব্যারাজের গেট আটকে ‘ইনটেক ওয়েল’-এ যাতে জল তোলা যায় সে জন্য বিকেলের পরে জলস্তর বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। যাতে বুধবার সকালে জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, ‘‘জলে পলি আসছে বলে বিকেলে পানীয় জলের সামান্য সমস্যা হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিকেলে যে কোথাও জল সরবরাহ হবে না তা জানানো হয়নি। অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন। যেখানেই জল ছাড়া হোক, আগাম জানানো প্রয়োজন। পুরসভার তরফে সেই তথ্য আগাম দিলে বাসিন্দারা পরিস্থিতি সামলাতে পারেন।’’ আজ, বুধবার ভোরে জল সরবরাহ কতটা ঠিক থাকবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি পুরসভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy